দীর্ঘ ছুটিতে স্কুলের স্মৃতিচারণায় শিশুরা (ভিডিওসহ)

দীর্ঘদিন বাড়িতে থেকে স্কুল, বন্ধু আর প্রিয় শিক্ষাঙ্গনকে নিয়ে স্মৃতি চারণ করেছে কয়েক জন শিশু।
দীর্ঘ ছুটিতে স্কুলের স্মৃতিচারণায় শিশুরা (ভিডিওসহ)

জীবিকার তাগিদে ধীরে ধীরে জনজীবন ফের স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও এখনো খোলেনি দেশের কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। গত ১৭ই মার্চ থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এই সময় কোন কোন স্কুল-কলেজ অনলাইনে ক্লাস নিচ্ছে।

তবে স্কুলের ক্লাস কিংবা বন্ধুদের সাথে আড্ডা কি আর অনলাইনে জমে? 

এই সকল বিষয় নিয়ে হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সাথে কথা কয়েকজন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

রাজধানীর একটি স্কুলের কেজি-ওয়ানের শিক্ষার্থী আবতাহী তাজওয়া। ওর বাবা মো. শিপন আহমেদ বলেন, “ফ্রাই ডে হলেই বেইলি রোডে ওকে নিয়ে যাই। স্কুলের আশপাশ থেকে ঘুরাইয়া নিয়া আসতেছি। গত ফ্রাইডেও ঘুরে আসছি, আমার ছেলেও গেছে।”

পরী নামের আরেক শিক্ষার্থী বলে, “আমি ফ্রেন্ডদেরকে মিস করি। ওই দিনগুলাকে মিস করি। এখন তো খেলা যায় না। স্কুলেও যাওয়া যায় না।” 

চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী মরিসাস আহমেদ কাসফিয়া বলে, “স্কুলে একসাথে বন্ধুদের সাথে খেলা করতাম। অনেকদিন ধরে ওদের সাথে দেখা হচ্ছে না। আমরা একসাথে খাবার খেতাম ক্যান্টিনে।”

কোন বন্ধুকে সবচেয়ে বেশি মনে পড়ে, এমন প্রশ্নের জবাবে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া আয়মান ইসলাম বলেন, "রাফিন, রায়ান তারপরে হচ্ছে রেদোয়ান। সবাইকে।”

তানজীব মজুমদার পড়ছে রাজধানীর খিলগাঁও এ অবস্থিত ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলে৷ পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া এই শিক্ষার্থী বলেন, “আসলে আমি আমার বন্ধুদেরকে অনেক বেশি পছন্দ করি। তাদের সাথে না দেখা করতে পেরে অনেক বেশি দুঃখিত এখন।”

আইডিয়াল স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণি পড়ুয়া শিক্ষার্থী কামাল কাব্য বলে, “সত্যি কথা বলতে আমরা যে আড্ডাটা দিতাম, স্কুলে যেই কথাটা হয় সেটা জুম বা ভিডিও কলে জীবনেও সম্ভব না। আমি খুব মিস করতেছি আমার ফ্রেন্ডকে।”

মহামারির আগে স্কুলে গেলে কী কজ করত জানতে চাইলে শফিকুর রহমান নামের এক শিশু বলে, “পড়ালেখা করতাম, দুষ্টামি করতাম, একটু খেলতাম।”

পাঁচ বছর বয়সী ফারজানা এই বছর নার্সারীতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গত মার্চে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভর্তি হতে পারেনি সে৷

ফারজানা হ্যালোকে বলে, “স্কুল বন্ধ। আমি ভর্তি হতে পারি নাই।

সন্তান স্কুল ও বন্ধুদের সাথে দেখা করতে না পারার কারণ জানতে প্রশ্ন করেন বাবা সাজু আহমেদকে। তিনি বলেন, “অনেক প্রশ্নই করে। স্কুল আমার খোলা নাই কিল্লাইগা। স্কুলে আমি যাইতে পারতেছি না, ভাল লাগতেছে না।”

ঝন্টু মিয়া নামের এক অভিভাবক বলেন, “ওরা স্কুল খুব মিস করে। স্কুলে কবে যাবে, কবে খুলবে এইটা জিজ্ঞাসা করে। বাসায় তেমন একটা পড়তে চায় না। বোর (বিরক্ত) হয়ে যাচ্ছে। কিছুই করা যায় না, খেলা যায় না।"

সন্তান কীভাবে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিচ্ছে জানতে চাইলে আয়েশা সিদ্দিকা বলেন, “একেবারে দিতে পারতেছে না। সবাই যার যার বাসায়। কেউ হয়তো বা গ্রামের বাড়িতে আছে। আর বাচ্চাদের তো ওইভাবে ফোনের হাই, হ্যালো ছাড়া ফোন ইউজ করতে দেওয়াটাও পসিবল না। যে সিচুয়েশন চলতেছে এই অবস্থায়, স্কুলটা যে খুলে দিবে এইটা আসলে চিন্তা করাও উচিত না।”

নাইম হোসেন জানান সন্তানের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ করাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমই এখন ভরসা। তিনি বলেন, “এখন হোয়াটসঅ্যাপে বা ওদের ফ্রেন্ডদেরকে আমি ফোনে ধরাইয়া দেই। ফেসবুকে ওদের সাথে যোগাযোগ করাইয়া দেই।”

সাত বছর বয়সী শিশু আয়েশা জান্নাতের মা শামীম আক্তার হ্যালোকে বলেন, “অনলাইনে যখন ক্লাস হয় তখন তো ম্যাডামের সাথে কথা বলার থেকে ফ্রেন্ডদের সঙ্গেই বেশি কথা হয়। তাদের সঙ্গেই তো কথা বলে সময়টা পাস করে।”

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com