সম্প্রতি হ্যালোর সঙ্গে কথা হয় পিংকির।
জানান, ব্র্যাকের হেড অফিসের ট্রান্সপোর্টে চাকরি করছেন গত সাত মাস ধরে। সকাল থেকে রাত অব্দি ছুটে চলেন এখান থেকে ওখানে।
রাজবাড়ির স্বজনকান্দার মেয়ে পিংকি গ্রামের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়ার পর চলে আসেন চাচীর বাসায়। এরপর চাচাতো বোনের সাথেই সময় কাটতো তার। সেভাবে আর স্কুলে লেখাপড়ার সুযোগ হয়ে উঠেনি বলে চাচাতো বোনকে দেখাশোনার পাশাপাশি বাসাতেই পড়াশোনা করতেন।
পিংকি বলেন, “আমি আর্থিক অভাব অনটনে পঞ্চম শ্রেণির পর আর পড়তে পারি নাই। চলে আসি এখানে। এরপর আমেকে আবার জোর করে নিয়ে যায় বিয়ে দেওয়ার জন্য। আমি তখন আবার চলে আসি। এরপর থেকেই এখানে আছি।”
স্বাধীনমনা পিংকি সব সময় চাইতো নিজে কিছু একটা করার। সেই ইচ্ছাশক্তি থেকেই ব্র্যাকে তিন মাসের ফ্রি ড্রাইভিং শেখেন। এরপর শিক্ষানবিশ চালক হিসেবে যোগ দেন চাকরিতে।
তিনি বলেন, “প্রতিদিন আট ঘণ্টা ডিউটি করি। মাঝেমাঝে ওভারটাইমও করি।”
কাজের ব্যস্ততায় সেভাবে অবসর পাওয়া হয় না তার। তিনি বলেন, “সারাদিন কাজ করে সেভাবে সময় পাই না। যেটুকু সময় পাই বোনদের সাথেই কাটাই।”
আরো পড়াশোনা করার স্বপ্ন দেখেন পিংকি। বলেন, “আমি খুব বেশি পড়াশোনা করতে পারি নাই। তাই এখন চাচ্ছি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে।”
তিনি মনে করেন প্রতিটা মেয়ের উচিত বাবা মাকে নিজের স্বপ্ন সম্পর্কে বোঝানো।
তাকে এখন বিয়ে করার জন্য পরিবার থেকে চাপ দিচ্ছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এখন বাসা থেকে সেভাবে চাপ দেয় না বিয়ের জন্য। বাবা মা আমাকে নিয়ে আরও গর্ব করেন।”
পিংকির সততা আর দৃঢ়তাই তাকে এই অবস্থানে নিয়ে এসেছে বলে জানান পিংকির চাচী শিরিনা পারভীন।
তিনি বলেন, “আমার পরিবারের জন্য তার যে অবদান, আমার উচিত তাকে দাঁড় করিয়ে দেওয়া। এজন্য আমি ব্র্যাকের ফ্রি ট্রেনিংয়ের কথা শুনে তাকে ভর্তি করিয়ে দেই। আমি সব সময় চেয়েছি আমার সন্তানের মতো সেও দাঁড়িয়ে যাক।”