‘অসহায় আছিলাম, পড়তে পারি নাই’ (ভিডিওসহ)

পুরান ঢাকায় এক চেয়ার কারখানায় অনেক শিশুর মতোই রঙ করার কাজ করে ইকরাম মিয়া।
‘অসহায় আছিলাম, পড়তে পারি নাই’ (ভিডিওসহ)

খবরের জন্য এই প্রতিবেদকের মুখোমুখি হতেই হাসি মুখে কথা বলে ও।

জানায়, ওর বয়স চৌদ্দ বছর। বাবার মৃত্যুর পর নিজের দেখাশোনার দায়িত্ব পড়ে নিজের কাঁধেই। মা ও বোনের ভরণ-পোষণের কর্তব্যটুকুও সামলে নিয়েছে বেশ।

মাসিক চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা আয় থেকে মা-বোনকে দিয়ে যা অবশিষ্ট থাকে তা জমিয়ে রাখে নিজের জন্য।

আগ্রহ থাকলেও পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েই অভাবের তাড়নায় ছেড়ে দিতে হয়েছে পড়াশোনা। আরও তিন ভাই থাকলেও তার দায়-দায়িত্ব নেননি কেউই। যেখানে খাবারই জুটছে না পেটে সেখানে পড়াশোনার চিন্তা করাটা অসম্ভবই মনে করে ইকরাম মিয়া।

ওবলে, “অসহায় আছিলাম তাই আর পড়তে পারি নাই। ভাইরা থেকেও পড়ায় নাই। হেরপর এই কাজে আইলাম।

“এমনে পড়ালেহার মধ্যে অনেক আগ্রহ আছিল। কিন্তু পারি নাই।”

সময়ের ব্যবধানে এখন আর পড়ার ইচ্ছাটা নেই। এখন শুধু পরিবারকে ভালো রাখাই লক্ষ্য। তার এখনও পড়তে ইচ্ছে করে কিনা-এমন প্রশ্নের জবাবে ইকরাম বলে, “এখন তো কামের মধ্যে মন বয়ে গেছে আর ইচ্ছা করে না। আগের কথা তো ভুইলা গেছি। এখন কাজের ধান্দায় থাকি। কাজটা শিখে মা-বোনকে জানি পালতে পারি এইডাই চেষ্টা করি।”

তবে, সে চায় না তার মতো কোনো শিশু অভাবে পড়ে কাজ করুক।

একটি নিরাপদ জীবনের আশায় ইকরাম স্বপ্ন দেখে বড়লোক হবার। কী হতে চাও, এমন প্রশ্নের জবাবে ইকরাম হাসিমুখেই উত্তর দেয়, “আমার স্বপ্ন আছিল ভবিষ্যতে বিদেশ যেন যাইতে পারি, টাকা পয়সা যেন জমাইতে পারি, একজন বড়লোক যেন হইতে পারি।

“তারপর মাকে যেন আঘাত না দেই। টাকা পয়সা জমায় রাস্তা দিয়া এমনভাবে হাঁটতে পারি যেন কেউ কিছু না কইতে পারে।”

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com