রাজধানীর নিকুঞ্জ ২ এর জামতলায় বসবাস তাদের। সেখানকার জাহিদ ইকবাল হাইস্কুলে পড়ছে দুজন।
হ্যালোর সঙ্গে এক আড্ডায় জীবন নিয়ে নানা কথা বলে তারা।
পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া কেয়া বলছিল, “আমি সকাল ছয়টায় ঘুম থেকে উঠি। ব্রাশ করে হালকা খাবার খেয়েই পড়তে বসি। ছয়টা থেকে নয়টা পর্যন্ত পড়ে তারপর স্কুলে যাই।
“বিকালে আরবী পড়ি, কোচিংয়ে যাই। আবার রাতে পড়তে বসি। বাড়ির কাজেও সাহায্য করি।”
কেয়া আরও বলে, “পড়ালেখা করতে আমার ভালো লাগে। পড়ালেখা করে আমি ডাক্তার হতে চাই। ডাক্তার হওয়া আমার বড় স্বপ্ন।”
দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া শ্রাবণী জানায় সে তার বোনকে অনুসরণ করে। দুজনে একত্রে পড়ে, একত্রে খেলাধুলা করে।
সে বলে, “আমি বড় হয়ে পুলিশ হতে চাই।”
মেধাবী শিক্ষার্থী হিসেবে এলাকা জুড়ে রয়েছে দুই বোনের সুনাম। কেয়া ও শ্রাবণীর মা পারভীন আক্তার একটি তৈরি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। মেয়ের সাক্ষাতকার নেওয়া হবে শুনে শত ব্যস্ততার মাঝেও হ্যালোর প্রতিবেদকের সঙ্গে দেখা করেন।
তিনি হ্যালোকে বলছিলেন, “সকালে কাজে যাই রাতে আসি। তাদেরকে সময় দিতে পারি না আমি। তারা একা একাই পড়ে। নার্সারি থেকেই তাদের রোল এক।”
আবেগআপ্লুত হয়ে তিনি বলেন, “আমার সামর্থ্য নাই। সরকারের সাহায্য পেলে হয়তো আমি তাদের স্বপ্ন পূরণ করতে পারব।”
কেয়া-শ্রাবণীর দেখাশোনা করেন তাদের নানী। তিনি বলেন, “আমি শুধু দুজনকে দেখাশোনা করি। তারা নিজেরাই পড়াশোনা করে।
“ওদের বাপ থাকা আর না থাকা সমান। কোনো দেখাশোনা করে না।”
কেয়া-শ্রাবণীর শ্রেণি শিক্ষক শান্তা ইসলাম হ্যালোকে বলেন, “তাদের দুজনের ভবিষ্যৎ আমি পরিষ্কার দেখতে পাই। তারা সব সময় ক্লাসে প্রথম।
“সবসময় শ্রেণির অন্যান্য কার্যক্রমে অংশ নেয়। তাদের জন্য আমার দোয়া আছে।”