ছুটির দিন বাদে প্রতিদিনই বাসাবো বালুর মাঠে ফুটবল অনুশীলন করতে দেখা যায় তাদের। তারা সবাই কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল এন্ড কলেজের মহিলা ফুটবল দলের খেলোয়াড়।
এই কিশোরীদের কারোর বয়সই ষোল পার হয়নি। তবুও তাদের চোখে রয়েছে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন। পড়াশোনার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ফুটবলের জন্য করে যাচ্ছে কঠোর পরিশ্রম। ছোট্ট এই কিশোরীদের স্বপ্ন একদিন তারাও খেলবে জাতীয় দলে।
নানা বাধা বিপত্তি থাকলেও তারা থেমে নেই বলে জানায়।
স্কুলটির নবম শ্রেণির ছাত্রী রেনি আক্তার এই দলের অধিনায়ক।
ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলাকে ঘিরে আগ্রহ ছিল তার।
রেনি বলে, “আমার ফ্যামিলি আমাকে ফার্স্টে মানা করছিল যে ফুটবলটা খেইলো না, মেয়ে মানুষ তো। পরে আমার বাবা যখন দেখেছে আমার আগ্রহ বেশি তখন বলছে ঠিকাছে তুমি খেলো। এখন আমার বাবা মা দুজনেই সাপোর্ট করেন।”
অনেক অভিভাবকদের অমতের পরও স্কুল কর্তৃপক্ষ চালিয়ে যাচ্ছে তাদের খেলোয়ার তৈরির প্রচেষ্টা।
কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল এন্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষক মেজবাউল ইসলাম বলেন, “আমাদের অনেক গার্ডিয়ানরাই তাদের মেয়েদের খেলতে দিচ্ছেন না।
“তারা নিয়মিত আসতে পারে না। এত বাধা বিপত্তি পার করেও আমরা খেলা চালিয়ে নিচ্ছি।”
১২ বছর বয়সী অদিতা সরকার মাঝমাঠের খেলোয়ার। এ বিষয়ে তার খালা বলেন, “ছোটবেলা থেকেই ওকে কেউ বাধা দেয় না। ওর বাবা-মায়েরও ইচ্ছা এমনই। আমাদের এখান থেকে কোনো বাধা নেই।”
এই দলের রক্ষণভাগের খেলোয়ার মারিয়াম রহমান ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী। ফুটবলকে আঁকড়ে ধরে যে স্বপ্ন দেখছে সেখানে মিলছে পরিবারের পুরোপুরি সমর্থন।
ও বলে, “আমার ছোটবেলা থেকেই ফুটবল খেলার অনেক ইচ্ছা। আমার বাবাও ফুটবল খেলতেন।
“আমার ফ্যামিলি থেকে অনেক সাপোর্ট দিচ্ছে। হয়তো ভবিষ্যতে ভালো ফুটবলার হতে পারবো।”
মূলত কদমতলা পূর্ব বাসাবো স্কুল এন্ড কলেজের ফুটবল কোচ মোহাম্মদ মাসুমের প্রস্তাবেই গঠিত হয়েছে এই নারী ফুটবল দল। মেয়েদের ফুটবল খেলার ব্যপারে অভিভাবকদের আরও উৎসাহী হতে বলছেন এই প্রশিক্ষক।
“অনেকের গার্ডিয়ান এখনও বিরোধী। তারা বলেন, যে ফুটবল খেলে কী হবে! উনারা ভাবতেছেন না যে মেয়েদের একটা ফুটবল টিম করলে দেশের জন্য অনেক উপকার। দেশ একটা ভালো প্লেয়ার পাবে। দেশের সুনাম নিয়ে আসবে।”
মোহাম্মদ মাসুমের আশা ভালো মাঠ, প্রশিক্ষণ, পর্যাপ্ত খেলার সুযোগ সুবিধা পেলে তার এ দল থেকে জাতীয় দলে সু্যোগ করে নিবে অনেকেই।