বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৮বছরের কম বয়সের শিক্ষার্থীদের ব্যাংকিং সেবা এবং আধুনিক ব্যাংকিং প্রযুক্তির সাথে পরিচিত করার পাশাপাশি সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে ২০১০ সালের ২ নভেম্বর স্কুল ব্যাংকিং বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করা হয়।
এ ব্যাপারে পূবালী ব্যাংক লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার আবু হাবিব খাইরুল কবির জানান, ব্যাংক একাউন্ট করতে শুধুমাত্র একশ টাকা জমা দিলেই হয়। তাদের থেকে কোনো চার্জ নেওয়া হয় না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফিন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন বিভাগের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বর্তমানে বিভিন্ন ব্যাংকে স্কুল শিক্ষার্থীদের হিসাব ১৯লাখ ৯৬ হাজার ৩০টি। এ হিসাবের বিপরীতে মোট জমার পরিমাণ এক হাজার চারশত ৯৪কোটি ৪০ লাখ টাকা।
স্কুল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে কীভাবে উপকৃত হচ্ছে জানতে চাইলে মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফাহিম মুন্তাসীর বলে, “স্কুল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আমার বিভিন্ন প্রয়োজনে টাকা তুলতে এবং জমা দিতে পারতেছি। এটিএম কার্ডের মাধ্যমে টাকা তুলে বই খাতা কিনতে পারতেছি।”
সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাঁওলি শামরিজা বলে, “স্কুল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে আমরা প্রত্যক্ষভাবে অর্থনীতির সাথে জড়িয়ে পড়ছি, অবদান রাখতে পারছি।”
মতিঝিল সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সৈয়দ হাফিজুর রহমান বলেন, “স্কুল ব্যাংকিং এর সাথে যদি অভিভাবকরাও সম্পৃক্ত থাকে এবং ব্যাংকগুলোও তাদের কার্যক্রম নিয়মিত ফলোআপ করে তাহলে এটা ভবিষ্যতের জন্য ছাত্রদের আরো উৎসাহিত করবে।”
দেশের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কার্যক্রমের অন্যতম একটি পদক্ষেপ হলো স্কুল ব্যাংকিং। এরপর থেকেই স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করতে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো আকর্ষণীয় মুনাফার নানা স্কিম চালু করে। ২০১০ সালে ‘স্কুল ব্যাংকিং’ কার্যক্রম শুরু হলেও শিক্ষার্থীরা টাকা জমা রাখার সুযোগ পায় ২০১১ সালে। প্রথম বছরে স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খোলা হয় ২৯ হাজার ৮০টি। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১২ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত স্কুল ব্যাংকিংয়ের আওতায় দেশের ব্যাংকগুলোতে মোট এক লাখ ৩২ হাজার ৫৩৭টি হিসাব খোলা হয়। ওই সময় মোট জমার পরিমাণ ছিল ৯৬ কোটি ৫১ লাখ টাকা। বাংলাদেশে কার্যরত ৫৮টি ব্যাংকের মধ্যে বর্তমানে ৫৫টি ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।