বাংলা বাগধারা ও ধ্বনি ব্যবহার করে ছন্দ সৃষ্টি করার জন্যই তাকে ছন্দের যাদুকর বলা হয়।
কবি ১৮৮২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি কলকাতার নিমতা গ্রামে জন্ম নেন।
তার বাবার বাড়ি বর্ধমানে। বাবা রজনীনাথ দত্ত ছিলেন কলকাতার ব্যবসায়ী। তার দাদু মানে পিতামহ অক্ষয় কুমার দত্ত ছিলেন ‘তত্ত্ববোধিনী’ পত্রিকার সম্পাদক।
স্কুলের পড়াশোনা আর পরিবেশে মন বসাতে পারতেন না এই কবি। কলকাতা সেন্ট্রাল কলেজিয়েট থেকে এন্ট্রাস পাশ করেন ১৮৯৯ সালে এবং ১৯০১ সালে স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে এফএ পাশ করেন। বিএ পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়ে বাবার সাথে ব্যবসায় যোগদানও করেন।
ব্যবসাতে মনোনিবেশ না করতে পেরে সবকিছু ছেড়ে কবিতা লেখায় মন দেন।
তার কবিতায় ফুটে ওঠে নানা ভাষার শব্দের নিপুণ ছন্দের সমাহার। বিশ্বের কাব্যসাহিত্যের সাথে অনুবাদ করার মধ্য দিয়ে বাংলার যোগাযোগ ঘটান।
প্রথম প্রথম কবির লেখাগুলোতে মাইকেল মধুসূদন দত্ত, দেবেন্দ্রনাথ সেন, অক্ষয়কুমারের মতো বড় বড় সাহিত্যিকদের প্রভাব পাওয়া যেত।
বাংলা ভাষায় নিজস্ব বাগধারা ও ধ্বনি দিয়ে নতুন ছন্দ তৈরি করতেই আনন্দ পেতেন বেশি। ছন্দ সম্পর্কিত প্রসিদ্ধ রচনা "ছন্দ সরস্বতী" ১৯১৮ সালে ভারতী পত্রিকার বৈশাখ সংখ্যায় প্রকাশিত হলে চারিদিকে তার খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে।
রবীন্দ্রযুগের কবি হওয়া সত্ত্বেও তার কবিতার বিষয়বস্তু, ছন্দ, নির্মাণকৌশল এবং শব্দের কারু কার্ককলাপের এক বিশেষ অংশ ফুটে
বিভিন্ন ধরণের ছন্দ উদ্ভাবনে তিনি ছিলেন এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। দেশাতত্মবোধ, ঐতিহ্যচেতনা, মানবপ্রীতি, শক্তিসাধনা প্রভৃতিই ছিল তার কবিতার বিষয়বস্তু।
সাহিত্যের এই খ্যাতিনামা কবি, ছন্দের যাদুকর মাত্র ৪০ বছর বয়সে ১৯২২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি মারা যান।