জেলায় বন্যা কবলিত পাঁচটি উপজেলায় প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছেন স্থানীয় প্রশাসন।
এবারের বন্যায় জেলার প্রায় পানিবন্দি ১৩ হাজার মানুষ ৬৫টি কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়। অনেকে পথের পাশে ছাউনির মধ্যে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে।
জেলা এলজিইডি জানিয়েছে, এবারের বন্যায় ৬৬ কিলোমিটার পাকা ও ২২০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা, ২২টি বড় সেতু ও কমপক্ষে ৮৬টি কালভার্ট সেতুসহ সংযোগ সড়ক ভেঙে গেছে। এতে প্রায় ৪০কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও পৌর শহরসহ জেলার ৪০টি ইউনিয়নে বন্যায় প্রায় তিন হাজারের বেশি পরিবারের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বন্যার পানিতে নতুন করে রোপা আমনসহ ৩৭ হাজার ৫শ হেক্টর জমির ফসল পানির নিচে। এতে কৃষকের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২৫ কোটি টাকা।
পঞ্চগড় থেকে ঠাকুরগাঁও ও দিনাজপুর রেল লাইনের ওপর দিয়ে পানি প্রবাহের কারণে ওই রেলপথের নয়নিবুরুজ স্টেশন থেকে কিসমত স্টেশন পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার রেলপথের বিভিন্ন জায়গার পাথর ও মাটি সরে গেছে।
উজান থেকে ধেয়ে আসা পানিতে শহরের টাঙ্গন নদীর তীরবর্তী জনবসতিসহ জেলার অন্য ১০টি নদীতে পানি ঢুকে পড়েছিল। ইতোমধ্যে নদ-নদীগুলোর পানি কমে গেছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসের তথ্য মতে, জেলার পাঁচটি উপজেলার ৪০টি ইউনিয়নের কয়েক লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় ৪২ মেট্রিক টন চাল ও নগদ দেড় লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক আব্দুল আওয়াল জানান, যেহেতু নদীর পানি কমতে শুরু করেছে, বন্যা ক্ষতিগ্রস্থ ঘর-বাড়ি ঠিক করার জন্য মানুষের আর্থিক অর্থের প্রয়োজন। তাই, সরকারের কাছে ক্ষতিগ্রস্তের তালিকা তৈরি করে চাহিদা পাঠানো হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলার প্লাবিত অঞ্চলগুলো হচ্ছে, শহরের হঠাৎপাড়া, ডিসি বাড়ি সরকার পাড়া ও খালপাড়া, সদর উপজেলার আকঁচা, রায়পুর, মোহাম্মদপুর, সালন্দর, শুকানপুকুরি ও রুহিয়া, বালিয়াডাঙ্গি, পীরগঞ্জ, রাণীংশকৈল উপজেলার আশেপাশের অনেক এলাকার বাড়ি-ঘর এখন পানির নিচে পড়ে ছিল। তবে কমে যাওয়া অনেকেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে।