‘থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্মহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব’  

থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা দিবসে ২০১৭ সালের প্রতিপাদ্য- 'থ্যালাসেমিয়া থেকে চাইলে রক্ষা, বিয়ের আগে করুন রক্ত পরীক্ষা’।
‘থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্মহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব’  

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বে থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক প্রায় দুইশত ৫০ মিলিয়ন। বাংলাদেশে প্রায় ১০ থেকে ১২ শতাংশ মানুষ থ্যালাসেমিয়া রোগের বাহক। এর মধ্য চার শতাংশই থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত।

থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসা প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. সালাউদ্দিন শাহ হ্যালোকে জানান, রক্তের কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) এবং পেরিফেলার ব্লাড ফিলথ (পিবিএফ) পরীক্ষা করতে হবে।

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম থাকলে হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস করে থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। মৃদু থ্যালাসেমিয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণ ও উপসর্গ খুবই অল্প থাকায় ব্লাড ট্রান্সিফিউশন লাগে না।

তিনি আরও জানান, রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া ফাউন্ডেশন বিয়ের আগে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের রক্ত পরীক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। বিশ্বের থ্যালাসেমিয়াপ্রবণ দেশেগুলোতে ইতোমধ্যে আইন করে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

'বাংলাদেশে এই পদ্ধতির প্রচলন করা হলে দ্রুততম সময়ে থ্যালাসেমিয়া রোগীর জন্মহার শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনা সম্ভব', বলেন তিনি।   

থ্যালাসেমিয়া নিয়ে ১৫ বছর ধরে গবেষণারত প্রতিষ্ঠান ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব থ্যালাসেমিয়া-র তথ্যমতে বাংলাদেশে বছরে সাড়ে সাত হাজার শিশু থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহণ করছে। সে হিসাবে দিনে ২০ জনের বেশি থ্যালাসেমিয়া আক্রান্ত শিশু জন্ম নিচ্ছে।

তাদের মতে, প্রতি বছর এক হাজার ৪০ জন শিশু বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর এবং ছয় হাজার চারশত ৪৩ জন শিশু বিটা থ্যালাসেমিয়া নিয়ে জন্মগ্রহন করছে। বর্তমানে ৩০ হাজারের বেশি শিশু এ রোগে ভুগছে।    

বিশেষজ্ঞদের মতে, থ্যালাসেমিয়া বহনকারী মানুষ সাধারণত রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতা ভোগে। এর ফলে অবসাদগ্রস্ততা থেকে শুরু করে অঙ্গহানিও ঘটতে পারে। বাবা অথবা মা কিংবা উভয়েরই থ্যালাসেমিয়ার জিন বহন করলে বংশানুক্রমে এটি সন্তানের মধ্য ছড়ায়। তবে এই রোগ ছোঁয়াচে নয়। জিনগত ত্রুটির কারণে এই রোগ হয়ে থাকে।    

থ্যালাসেমিয়া প্রধানত দুই রকম। আলফা থ্যালাসেমিয়া ও বিটা থ্যালাসেমিয়া। আলফা থ্যালাসেমিয়া রোগের উপসর্গ মৃদু বা মাঝারি হয়ে থাকে। অপর দিকে বিটা থ্যালাসেমিয়া ক্ষেত্রে রোগের প্রকোপ ও তীব্রতা দুই-ই বেশি থাকে।

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা দিবস পালিত হয়ে আসছে। ৮ মে থ্যালাসেমিয়া সচেতনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com