৪৬বছরেও স্বীকৃতি মেলেনি

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাঙালিদের সংগঠিত করার কাজ করতে গিয়েই শহীদ হয়েছেন ঠাকুরগাঁও জেলার ডা. সুজাউদ্দিন আহমদ। আজও সে কাজের স্বীকৃতি পায়নি তার পরিবার।
৪৬বছরেও স্বীকৃতি মেলেনি

পরিবার সূত্রে জানা যায়, ১৯৭১ সালের ১৭ই এপ্রিল চেম্বার থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে সুজাউদ্দিন আহমদ ও তার বড় ভাইসহ সাত জনকে হত্যা করলেও আজও মুক্তিযোদ্ধা বা সংগঠক হিসাবেও স্বীকৃতি পাননি সুজাউদ্দিন।

পীরগঞ্জ উপজেলার বীরহলী গ্রামে তার বাড়ি। তৎকালীন দিনাজপুর জেলার পীরগঞ্জ থানা আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন তিনি।

সম্প্রতি কথা হয় ডা. সুজাউদ্দিনের ছেলে পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক, বদরুল হুদার সাথে।

বদরুল হুদা হ্যালোকে বলেন, 'মায়ের মুখে শুনেছি, বাবা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের হানাদারদের কীভাবে প্রতিরোধ করা যায় সেটা নিয়ে এলাকার মানুষদের সাথে সভা ও পরিকল্পনা করতেন। আর এলাকার মানুষকে যুদ্ধে উদ্বুদ্ধ করার কাজও করতেন।  

‘বাবা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেন এ খবর পাকিস্তানিরা পেলে, ১৭ই এপ্রিল বাবাসহ আরও কয়েকজনকে তুলে নিয়ে যায়।

‘সেদিনই আমার বাবা, আমার চাচা মোজ্জাফর হোসেন, অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা, আব্দুল জব্বার, আতিউর রহমানসহ আরও দু’জনকে শিবগঞ্জের জামালপুর ভাতারমারী ফার্মে বেয়নেট চার্জ করে হত্যা করে হানাদার বাহিনী।

‘এরপর আমার বাবা ও চাচার লাশ গোপনে এনে বীরহলী গ্রামে দাফন করা হয়।’ 

‘আমদের এখনও শহীদ সন্তানের এবং আমার মার শহীদের স্ত্রী হিসেবে সরকারি কোন স্বীকৃতি মেলেনি।

‘কবরটি সংরক্ষণেরও কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি।’  

‘২০১৪ সালে জাতীয় স্বীকৃতির জন্য মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে আবেদন করেছি, এখনও জবাব মেলেনি।  

‘আমার মায়ের বয়স ৭৮বছর। মৃত্যুর আগেই যদি মা এই স্বীকৃতি পেতেন তাহলে এটা আমাদের পরিবারের জন্য অনেক বড় পাওয়া হতো।’  

একই রকম প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন অধ্যাপক গোলাম মোস্তাফা ও আতিউর রহমানের পরিবারের সদস্যরা।

এবিষয়ে পীরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার বলেন, ‘ডা. সুজাউদ্দিনসহ সাত জনকে যেখানে হত্যা করা হয়েছিল, সেখানে তাদের স্মরণে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণের নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।

‘উপজেলার একজন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার কবর ইতোমধ্যে সরকারিভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। নির্দেশনা পেলে পর্যায়ক্রমে সব শহিদের কবর সংরক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ 

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com