ও হ্যালোকে বলে, “বাবা অনেক ব্যস্ত থাকেন। সকাল ৬টায় যান, রাত ১১টায় ফেরেন। কখনও কখনও বাবার সঙ্গে দেখাই হয় না।
“আর মা সকালে কলেজে গেলে ৫টায় আসেন। মাঝে মাঝে পার্কে খেলতে নিয়ে যান। বাকি সময় একা থাকতে হয়। আমার ছোট ভাই মার জন্য কান্নাকাটি করে। ও আন্টির (গৃহকর্মী) কাছে থাকতে চায় না।
সারাদিন বাড়িতে কী করে জানতে চাইলে ইশরাক বলে, “মোবাইলে গেইম খেলেই সময় কাটে।”
এ বিষয়ে হ্যালোর সঙ্গে কথা বলেন ইশরাকের মা ফাতেমা জাহান, বাচ্চাদের কষ্ট বুঝি। কিন্তু পরিবারে প্রচুর খরচ আছে। একজনের আয়ের উপর ভরসা করা যায় না।”
কথা হয় উত্তরা ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলের শিক্ষিকা জাকিয়া জাহানের সঙ্গে।
তিনি এবং তার স্বামী শিক্ষকতা করেন। তার ছেলে ফারজান (৪) ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুলে ক্লাস ওয়ানে পড়ে।
ফারজান হ্যালোকে বলে, “নানীর কাছে থাকি আমি। তবুও মার জন্য খারাপ লাগে। বাবার সঙ্গে ঘুরতে যেতে ইচ্ছে করে।”
একটু হেসে বলে ওঠে, “বাবা আমাকে খেলনা কিনে দেন।”
ফারজানের মা জাকিয়া জাহান বলেন, “আমি সত্যি ওদের সময় দিতে পারি না। গৃহকর্মীর কাছে থেকে আচরণগত সমস্যা হচ্ছিল বলে মাকে এনে রেখেছি।”
মা বাবার ব্যস্ততার কারণে এভাবে অনেক শিশুকে বড় হতে হয় গৃহকর্মীর কাছে। এতে শিশুর আত্মিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয় বলে মনে করেন মনোবিদ রৌফুন নাহার।
তিনি জানান, শিশু সুস্থ স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে পরিবারের ভূমিকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একটি শিশু তার বাবা-মায়ের কাছে গুণগত সময় এবং উৎসাহ-উদ্দীপনা না পেলে তার সামাজিক, আবেগিক এবং আত্মিক বিকাশ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হয়।
সামাজিক, আবেগিক এবং আত্মিক বিকাশের সাথে মেধার বিকাশ সরাসরি সম্পর্কযুক্ত, জানান তিনি।