ড্রামের সেতুতে ‘কোনো রকম’ পারাপার ৫ গ্রামের মানুষের (ভিডিওসহ)

'পরে মেরামত না করায় গ্রামের সাধারণ মানুষ নিজেদের অর্থায়নে একটি ভাসমান সেতু নির্মাণ করে।'

পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজার সংলগ্ন কুমিরমারা খালের উপর এলাকাবাসীর অর্থায়নে নির্মিত প্লাস্টিকের ড্রামের সেতু দিয়েই পারাপার হয় পাঁচ গ্রামের মানুষ।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে উপজেলা পরিষদের অর্থায়নে কুমিরমারা খালের উপর লোহা ও ইট সিমেন্টের স্ল্যাব দিয়ে একটি সেতু তৈরি করা হয়। নির্মাণের দুই বছর পরেই ভেঙে যায় এটি।

পরে মেরামত না করায় গ্রামের সাধারণ মানুষ নিজেদের অর্থায়নে একটি ভাসমান সেতু নির্মাণ করেন।

এলাকাবাসী জানায়, নিজেদের অর্থায়নে ড্রাম দিয়ে ভাসমান সেতু বানালেও সেটাও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যায়। সেটাকেই আবার মেরামত করে পারাপার চলছে। তবে এই সেতু দিয়ে সাইকেল ছাড়া অন্য যানবাহন চলে না। ফলে শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, কৃষকসহ নানা পেশার দশ হাজার মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।

এই সেতু পার হওয়ার সময় হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা হয় এক বৃদ্ধ নারীর।

তিনি বলেন, “আমরা বুড়ো মানুষ বাবা। এদিক দিয়ে হাঁটতে আমাদের ভয় হয়। শুধু কাঁপে। পরে যাই নাকি।”

এই গ্রামের প্রাথমিকের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে হ্যালো। সে বলে, “ব্রিজের জন্যই স্কুলে যেতে কষ্ট হয়। ব্রিজ হলে আমাদের উপকার হয়।”

প্রতিদিনই এই সেতু পার হয়ে মাদ্রাসায় যাতায়াত করা দুই শিশুর সঙ্গেও কথা হয় হ্যালোর।

তারা বলে, “প্রতিদিনই যাতায়াত করি। কিন্তু ভয় লাগে।”

স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, কুমিরমারা, মজিদপুর ও এলেমপুর,পশ্চিম কুমিরমারা গ্রামের শতকরা ৯০ ভাগ মানুষ কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। এখানকার কৃষকরা ১২ মাস সবজি চাষ করে তাদের সংসার পরিচালনা করেন। উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে জেলা শহরেও এই সবজি পাঠানো হয়। কিন্তু এই সেতুতে যানবাহন চলে না বলে এসব মালামাল পরিবহন করতে হয় মাথায় করে।

কথা হয় কয়েক জন কৃষকের সঙ্গেও। নিজের ক্ষেতে শাক তুলছিলেন এক কৃষক। তিনি বলেন, “এসব কৃষি পণ্য মাথায় করে পারাপার করতে হয়। কষ্ট হয় অনেক।”

মাথায় সবজি নিয়ে সেতু পার হওয়ার সময় কথা হয় আরেক কৃষকের সঙ্গে।

তিনি বলেন, “বড় কষ্ট হয়। কত দূর থেকে মালামাল নিয়ে আসি মাথায় করে। এভাবেই আমাদের চলতে হয়। আমাদের কষ্টের কোনো শেষ নাই।”

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা প্রশাসনের তৈরি ক্ষতিগ্রস্ত সেতুটির স্ল্যাব অনেক জায়গাতেই ভেঙে গেছে। কোনো কোনো জায়গায় স্ল্যাব নেই একেবারেই।

এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল মিয়া বলেন, “পরিষদে বাজেট নাই। নতুন কোনো বাজেট আসলে বরাদ্দ দেওয়া হবে।”

প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: পটুয়াখালী।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com