দ্রুত নগরায়ণ ও শিল্পায়ন পরিবেশে ভারি ধাতুর দূষণ বাড়িয়েছে। এর ফলে বাতাস, পানি, মাটি, খাবার, খেলনা, রঙ ও রান্নার সামগ্রীর মাধ্যমে শিশুদের বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি বেড়েছে।
Published : 06 Nov 2024, 07:00 PM
বিশ্বে সিসা দূষণে ক্ষতিগ্রস্থ শিশুর সংখ্যার দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। এছাড়া দেশের প্রায় সাড়ে তিন কোটির বেশি শিশুর রক্তে বিপজ্জনক মাত্রায় সিসার উপস্থিতি রয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু তহবিল- ইউনিসেফ।
মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক জাতীয় কর্মশালায় এসব তথ্য তুলে ধরা হয় বলে হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সংস্থাটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সিসাসহ শিশুদের ক্ষতি করে এমন ভারি ধাতুর উৎস সম্পর্কে ধারণা বাড়াতে এবং সিসা দূষণ কমাতে সরকারি ও বেসরকারি খাতের অংশীজনদের সম্পৃক্ত করার বিষয়ে এ কর্মশালা আয়োজন করা হয়।
ইউনিসেফের সঙ্গে যৌথভাবে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এ কর্মশালার আয়োজন করে। এতে আগের গবেষণার ফলাফল তুলে ধরে শিশুদের রক্তে উদ্বেগজনক মাত্রায় সিসার উপস্থিতি, সিসার উৎস ও দূষণের উপায়গুলো দেখানো হয়।
কর্মশালায় বলা হয়, দ্রুত নগরায়ণ ও শিল্পায়ন পরিবেশে ভারি ধাতুর দূষণ বাড়িয়েছে। এর ফলে বাতাস, পানি, মাটি, খাবার, খেলনা, রঙ ও রান্নার সামগ্রীর মাধ্যমে শিশুদের বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে আসার ঝুঁকি বেড়েছে। এর ফলে স্থায়ীভাবে তারা স্নায়বিক ও শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ইউনিসেফ জানায়, রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) এবং আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআর, বি) এর সঙ্গে ইউনিসেফ খুলনা, টাঙ্গাইল, পটুয়াখালী ও সিলেট জেলায় ৯৮০ এবং ঢাকায় ৫০০ শিশুর রক্ত পরীক্ষা করে সবার রক্তে সিসার উপস্থিতি পায়।
যার মধ্যে চার জেলায় ৪০ শতাংশ এবং ঢাকায় ৮০ শতাংশ নমুনায় প্রতি ডেসিলিটার রক্তে ৫ মাইক্রোগ্রামের বেশি সিসা পাওয়া যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্ধারিত ন্যূনতম মাত্রার চেয়ে বেশি।
এই প্রসঙ্গে ইউনিসেফের বাংলাদেশ প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ারস বলেন, সাধারণত ভারি ধাতু বিশেষ করে সিসা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের ওপর বেশি গুরুতর প্রভাব ফেলে, এই ক্ষতি চিরস্থায়ী ও অপরিবর্তনীয়। দুর্ভাগ্যবশত, শিশুদের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের বিকাশের সময়সীমা কমে যায় এবং প্রায় সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তিনি আরও বলেন, ইউনিসেফ অংশীদারদের সঙ্গে একত্রে মিলে অন্তর্বর্তী সরকারকে একটি স্বাস্থ্যকর ও নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যেখানে প্রতিটি শিশু সিসা ও বিষাক্ত ধাতুমুক্ত পরিবেশে বেড়ে উঠতে, খেলতে ও শিখতে পারবে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৬। জেলা: ঢাকা।