
ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত অনেকেই এখনো ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারেননি। ঘূর্ণিঝড় চোখ রাঙালেই কেবল সামনে আসে পূর্বে ক্ষতিগ্রস্তদের আর্তনাদ।
উপকূলবাসী বলছেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার মূল আঘাত বাংলাদেশে হলে এই মানুষগুলোর পক্ষে হয়ত আর কখনোই স্বাভাবিক জীবনে ফেরা সম্ভব হতো না। তাই ভবিষ্যতে কোনো দুর্যোগের মুখোমুখি হওয়ার আগেই এই মানুষগুলোকে সহযোগিতা করা দরকার।
সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার কুড়িকাহুনিয়া গ্রামে কথা হয় মেহেদী হাসান লাভলু নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে।
হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলছিলেন, “আমাদের ছয় বিঘা ভিটা-বাড়ি ছিল, ৪০ বিঘা বিলান জমি ছিল। ছিল পাঁচ ভাই, এক বোন, স্ত্রী, কন্যা, বাবা-মাকে নিয়ে সুখের একটি যৌথ পরিবার। ভালোই ছিলাম আমরা সবাই। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় আম্পনের আঘাতে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় সুখের পরিবারটি।”
লাভলু যোগ করেন, “আম্পানের আঘাতে শ্রীপুর লঞ্চঘাট এলাকা থেকে কপোতাক্ষ নদী ভেঙ্গে যায়। নদীর পানি প্রবল বেগে আমাদের বাড়ির উপর দিয়ে প্রবাহিত হয় এবং নিয়মিত জোয়ার ভাটা খেলায় বসত-বাড়ি খালে পরিণত হয়। সেই থেকে আব্বা-আম্মাসহ চার ভাই খুলনায় একটি বাসা ভাড়া করে আছেন।”
নিজেও একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন জানিয়ে বলেন, “আমি পার্শ্ববর্তী খাজরা ইউনিয়নের তুয়ারডাঙ্গা গ্রামের একটি ভাড়ার বাড়িতে স্ত্রী ও শিশু কন্যাদের নিয়ে থাকি।”
লাভলুর অভিযোগ, গত চার বছর পথে পথে ঘুরে বেড়ালেও তার খোঁজ নেয়নি কেউ। সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালিকায়ও নামটুকু জোটেনি তার পরিবারের।
আম্পানে ক্ষতিগ্রস্তদের সহযোগিতার প্রসঙ্গে কথা হয় প্রতাপনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু দাউদ ঢালির সঙ্গে।
হ্যালোকে তিনি বলেন, “ঘূর্ণিঝড় আম্পানের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত অনেক পরিবার এলাকা ছেড়ে অন্য এলাকায় বসবাস করছে। তাদেরকে স্ব স্ব স্থানে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া মুজিব বর্ষের যে ঘর তালিকা প্রণয়ন করা হয় সে সময় আমি এই ইউনিয়নের দায়িত্ব ছিলাম না।“
এ বিষয়ে আশাশুনির উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইয়ানুল রহমান হ্যালোকে বলেন, “মুজিব বর্ষের তালিকা তিন বছর আগে হয়েছে। নতুন ভাবে তালিকার সুযোগ নেই। তবে সরকারিভাবে যদি কোনো সুযোগ থাকে পুণরায় তাদের খুঁজে বের করে তালিকা প্রণয়নের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি ঘরের ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।”
প্রতিবেদকের বয়স: ১১। জেলা: সাতক্ষীরা।