বিদ্যালয়ের পাঠদান আনন্দময় হবে কবে?

“বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্কুলে আনন্দ হয়। তাছাড়া স্কুল বোরিং।”
বিদ্যালয়ের পাঠদান আনন্দময় হবে কবে?

নেত্রকোণা জেলার কাকলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে সাওদা ইসলাম।

স্কুলের সব বিষয়ে তাকে খুব ভালো ফলাফল করতে হবে- এটাই তার বাবা-মায়ের প্রত্যাশা। এতে পড়াশোনাটাকে সাউদার বোঝার মতো মনে হয়।

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আনন্দময় করে তোলার নানান চেষ্টার পরও ভালো ফলাফল করার চাপ, খেলার মাঠ ও বিনোদন কেন্দ্রের অভাব শিশুর শিক্ষা জীবনকে আনন্দহীন করে তুলছে।

সম্প্রতি হ্যালো ডট বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয় কয়েক জন শিক্ষার্থীর।

গোপালগঞ্জের একটি বেসরকারি মাধ্যমিক স্কুল থেকে এবার এসএসসি পাশ করেছে সাব্বির।

সে হ্যালোকে বলে, “ক্লাসের পড়া, পরীক্ষার পড়া তো আছেই। এরপর পাশ করার পর পর ছিল ভালো কলেজে ভর্তি হওয়ার চাপ। এত চাপে চ্যাপ্টা হয়ে গেলাম।”

আরিয়া এরশাদ জামালপুরের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ে। সে জানায় পিইসি উঠে যাবার ফলে পড়াশোনার চাপ কিছু কমেছে।

তার ভাষায়, “বিভিন্ন অনুষ্ঠানে স্কুলে আনন্দ হয়। তাছাড়া স্কুল বোরিং।”

তবে ভিন্নমত পোষণ করে রাজধানীর একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী জুনাইরা ও মানিকগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রী সালমা।

জুনায়রা জানায় স্কুলের সময়টা তার ভালোই লাগে। কারণ পড়ার বাইরে বাসায় টিভি দেখা, গুগোল করা বা টিচারের কাছে পড়ার বাইরে আর কিছু করার নেই।

সে বলে, “স্কুলই ভালো। সেখান পড়াও যেমন আছে, বন্ধুদের সঙ্গে মজাও করা যায়।”

সালমার স্কুল ভালো লাগে কারণ স্কুলে থাকলে বাসার কোনো কাজ করতে হয় না। আবার খেলারও সুযোগ পাওয়া যায়।

মোবাইল ফোনে সে হ্যালোকে বলে, “না পড়লে টিচাররা, ম্যাডাম রাগ করে, বকা দেয়। এইটা ছাড়া স্কুলই ভালো। কোনো কাজ করন লাগে না।”

সম্প্রতি রাশিয়া থেকে বাংলাদেশে বেড়াতে এসেছে জাহারা ও আরিয়া নামের দুই শিশু। সম্পর্কে তারা দুই বোন। জাহারা সপ্তম আর আরিয়া পঞ্চম গ্রেডে পড়াশোনা করে।

তারা জানায় মস্কো শহরের যে স্কুলে তারা পড়ে সে স্কুল তাদের বেশ ভালো লাগে। রাশিয়ায় ছয় বছর বয়স থেকে স্কুলে যাওয়া বাধ্যতামূলক। এরপর প্রথম চার বছর পড়তে হয় লেভেল-এক, তারপর পাঁচ বছর পড়তে হয় লেভেল-দুই, তারপর আরো দুই বছর পড়াশোনার পর শেষ হয় সাধারণ শিক্ষা।

সাহারা হ্যালোকে বলে, “বাবা মা সারাদিন ব্যস্ত থাকে বলে টিচার আর বন্ধুদের সঙ্গে আনন্দেই কাটে তাদের স্কুলের সময়।”

অনলাইনে কথা হয় আমেরিকার কানেক্টিকাটে থাকা তৃতীয় শ্রেণিতে পড়া ওঁম মিশ্রমুখার্জীর সঙ্গে।

ওঁম তার অভিজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে হ্যালোকে বলে কয়েক দিন আগে স্কুলের ব্যবস্থাপনায় বাবা মাকে ছাড়াই অন্য শহরে এগ্রো ফার্ম দেখতে গিয়েছিল সে। সেখানে সহপাঠীদের সঙ্গে সাত দিন ছিল থাকতে হয় তাকে।

ফার্মটিতে কীভাবে কাজ হয় তা দেখেছে এবং নিজেরা কাজও করেছে। আনন্দের সঙ্গে অনেক কিছুই শিখে এসেছে। তাই স্কুলে যেতে তার ভালোই লাগে।

কানাডার মন্ট্রিয়ালে থাকা অর্জিতা তেওয়ারীর সঙ্গেও কথা বলে হ্যালো।

সে বলে, “নানান দেশ থেকে আসা নানারকম মানুষের সঙ্গে স্কুলে থাকতে হয় বলে স্কুল সব সময় আনন্দের হয় না। তবে টিচাররা খুব কোঅপারেটিভ বলে স্কুল ভালোই লাগে।”

এ বিষয়ে নেত্রকোণার একটি সরকারি প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক মিনতি সাহা বলেন, “স্কুলে এসে বাচ্চারা আনন্দ পেলে শেখে তাড়াতাড়ি। আর এই শিক্ষাটা সে দীর্ঘদিন ধরে রাখতে পারে যা তার পরবর্তী জীবনেও কাজে দেয়।”

প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। জেলা: ঢাকা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com