আমাদের ঘটনাবহুল এসএসসি

অনেক প্রতিক্ষার পর ১৮ মাস পর খোলা হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
প্রতিনিধিত্বশীল ছবি

প্রতিনিধিত্বশীল ছবি

এসএসসি পরীক্ষাটা আমাদের কাছে একটু চড়াই উৎরাইয়েরই বটে। হঠাৎ মহামারি করোনাভাইরাসের হানা আর উলোট-পালট হয়ে গেল সব!

সবকিছু থমথমে, বাইরে বের হওয়া যায় না আর দূরশিক্ষণের যুগে দেশ। কিন্তু পড়াশোনার অবস্থা একেবারেই বাজে। মন বসছিল না কোনোভোবেই। অনেকের পরিবারে শুরু হলো অর্থনৈতিক চাপ। কেউ চাকরি হারাচ্ছে, কেউবা পড়াশোনা রেখে যোগ দিচ্ছে কাজে।

অনেক প্রতিক্ষার পর ১৮ মাস পর খোলা হয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এরপর আমরা ৩০ শতাংশ সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আন্দোলন করি। তখন আমাদের জন্য এটাই ছিল বাস্তবতা। আমরা জানতাম চার মাস পর ২০২২ সালের মার্চেই হবে আমাদের পরীক্ষা।

এরপর সারাদেশের সঙ্গে আমরাও মানববন্ধন করি। এর আগে আমি এবং আমার বন্ধু ফারহান, সিফাত ও সুদীপ থানায় গিয়ে অনুমতি নিয়ে আসি। এটাই আমার জীবনে প্রথম কোনো আন্দোলনে অংশগ্রহণ। পুরোটাই শিক্ষার্থীদের জন্য, এখানে কোনো রাজনৈতিক লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নেই।

দুই শতর মতো শিক্ষার্থী মিলে আমরা মিছিল বের করি। লোকজন হা করে তাকিয়ে ছিল। মিছিলটির সঙ্গে নিরাপত্তার জন্য কয়েকজন পুলিশ সদস্যও ছিলেন।

এরপর নভেম্বরের ২৫ তারিখ আমাদের প্রি-টেস্ট পরীক্ষা নেয়া হয়। মজার ব্যাপার হলো- ক্লাস করলাম দুইমাস, বেতন নেয়া হলো বারো মাসের। এটা নিয়েও প্রতিবাদ করি আমরা। মহামারি পরিস্থিতির অবনতি হলে আবার বন্ধ ঘোষণা করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।

মার্চে আবার খোলা হলে জানতে পারি, আমাদের পরীক্ষা হবে ৭০ শতাংশ সিলেবাসে এবং নয় বিষয়ে। এছাড়াও পরীক্ষার সময়সূচিও কমানো হবে। পরীক্ষা হবে ৫০ নম্বরের। এমনই দ্বিধা দ্বন্দ্বে স্কুলের বিদায় অনুষ্ঠান হয়ে গেল।

পরীক্ষার প্রস্তুতি চলছে আমাদের। কিন্তু হঠাৎই আবার খবরে দেখি সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় স্থগিত করা হয়েছে আমাদের পরীক্ষা। এরপর ১৭ জুলাই ঘোষণা করা হলো যে আমাদের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৫ সেপ্টেম্বর। ভালো ভাবে পরীক্ষা শেষ করতে পারব এটাই এখন প্রত্যাশা।

প্রতিবেদকের বয়স: ১৭। জেলা: পটুয়াখালী।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com