
বিভিন্ন কাজে, চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বা বেড়াতে মাঝে মাঝেই আমাদের ঢাকা যেতে হয়।
আমার জেলা বাগেরহাট থেকে ঢাকায় যেতে আগে সাত থেকে আট ঘণ্টা লাগত। ঘাটে জ্যাম থাকলে তো আরো বেশি। কোনো কাজের জন্য ঢাকায় গেলে আগের দিন রওনা দিতে হতো।
দীর্ঘ যাত্রা শেষ করে কোনো আত্মীয়ের বাসায় গিয়ে রেস্ট করে তারপরে যেতে হতো নির্দিষ্ট কাজে। মানে এক দিনের কাজ হলেও ঢাকায় যাওয়া আসা মিলে আমার দুই থেকে তিন দিন সময় লাগত। কিন্ত পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর থেকে এই চিত্র পুরাই পাল্টে গেছে।
পদ্মাসেতু হওয়ার পর ২৪ জুলাই আমি প্রথম ঢাকায় যাই।
আমার আর ছোট বোনের চোখের চিকিৎসার জন্য। সকাল ১১টায় ছিল আমাদের সিরিয়াল দেওয়া ছিল। আমরা ভোর ৬ টায় রওনা দিয়ে ৯:০২ মিনিটেই বাস থেকে গুলিস্থান নামি। আর ডাক্তারের ওখানে পৌছাই ১০:১০ মিনিটে।
সময়ের এতো আগে পৌঁছাতে পেরেছি শুধু মাত্র পদ্মাসেতুর কারণেই। যেদিন চিকিৎসকের কাছে সিরিয়াল দেওয় সেই দিনই বাগেরহাট থেকে রওনা দিয়ে সময়ের আগে পৌঁছাতে পারা আমার কাছে এতদিন স্বপ্নের মতো ছিল।
আমি পদ্মা সেতু দেখার জন্য খুবই আগ্রহী ছিলাম। তাই এবারের ভ্রমণটা আমার কাছে ছিল খুবই অন্য রকম। আমি বাসে বসে প্রকৃতিকে উপভোগ করছিলাম আর অপেক্ষায় ছিলাম আমার বাস কখন পদ্মা সেতুর উপর দিয়ে যাবে।
আমার অপেক্ষা প্রহর শেষ হয়ে অবশেষে আমি পদ্মা সেতুর দেখা পাই। আমি সেতুর সৌন্দর্যকে উপভোগ করি, মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করি। আর মনে মনে ভাবতে থাকি এই নদী পার হতে প্রতিবারই কত সময় লাগত, কত কষ্ট হতো বসে থাকতে থাকতে।
আমার কাছে পদ্মা সেতু মানে ভোরে রওনা দিয়ে সকালেই ঢাকায় পৌঁছে যাওয়া। এটা কিছুদিন আগেও অসম্ভব ছিল। এবারের ঢাকায় যাওয়াটা যেন স্বপ্নের মতো ছিল। তাই হয়তো পদ্মা সেতুকে বলা হয় স্বপ্নের সেতু।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: বাগেরহাট।