কোনো সম্প্রদায় পিছিয়ে পড়ুক বা পিছিয়ে থাকুক এটা আমি চাই না।
Published : 09 Jan 2025, 08:46 PM
বিন সম্প্রদায় বাংলাদেশের একটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, যারা মূলত সনাতন ধর্মাবলম্বী। জানতে পারি, ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা ও রাজশাহীতে এ সম্প্রদায়ের বেশিরভাগ মানুষের বসবাস। তাদের আদি পেশা কৃষিকাজ।
এই সম্প্রদায়ের মানুষ শিক্ষাবঞ্চিত হয়ে সমাজের মূল শ্রোত থেকে অনেকটাই পিছিয়ে আছে। একসময় তারা পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী ছিল না, বেশিরভাগ শিশুই স্কুলে যেত না। সেসময় নানা কুসংস্কার তাদেরকে ঘিরে ধরেছিল।
বিনদের জীবনে পরিবর্তনের ছোঁয়া কিছুটা হলেও লেগেছে তা এখন তাদের দেখলেই আন্দাজ করা যায়। অনেক শিশু এখন স্কুলে যায়, এমনকি বাল্যবিয়ের ব্যাপারে সচেতনতাও বাড়ছে।
এই সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন কিশোরী ঋতুস্রাব নিয়ে সচেতনতামূলক একটি কর্মশালায় অংশ নেয়। তাদের মধ্যে অ্যানি বিন নামের একজনের সঙ্গে কথা হয় আমার।
এখান থেকে সে জানতে পেরেছে, মাসিক সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দিলে তা লুকিয়ে না রেখে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। যা আগে কখনো করেনি সে। অথচ মাসিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ শারীরিক বিষয়ে কথা বলতে এই কিশোরীরা একসময় সংকোচ বোধ করত।
বিস্তারিত জেনে আমার মনে হয়েছে, তারা এখনো অর্থনৈতিকভাবে অনেক পিছিয়ে। কৃষি জমি হারিয়ে অনেকেই পেশা বদল করে ফেলেছে। কেউ মুচি, কেউ পরিচ্ছন্নতাকর্মীসহ বিভিন্ন পেশায় যুক্ত হয়েছে।
কোনো সম্প্রদায় পিছিয়ে পড়ুক বা পিছিয়ে থাকুক এটা আমি চাই না। বিন শিশুরাও নিজেদের জীবনমানের পরিবর্তন চায়। তাদের মধ্যে যে সুপ্ত প্রতিভা রয়েছে তা বিকশিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে রাষ্ট্রকেই।
এজন্য শিশুদের শিক্ষার সুযোগ ও তাদের জীবনমানের উন্নয়নে পদক্ষেপ নিতে হবে। তাদেরকে স্বপ্ন দেখাতে পারলে এবং সাহস দিতে পারলেই গড়ে উঠবে এক নতুন ভবিষ্যৎ।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৩। জেলা: ঢাকা।