বই পড়ার অধিকার একটি মৌলিক সাংস্কৃতিক অধিকার। ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি বন্ধ হওয়া মানে অনেক মানুষ সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।
Published : 29 Dec 2024, 07:25 PM
আমি ছোটবেলা থেকেই বই পড়ার প্রতি আগ্রহী ছিলাম। স্কুলের পাঠাগার থেকে নানা ধরনের বই পড়তাম।
সেখানে বইয়ের সংগ্রহ নিঃসন্দেহে ভালো ছিল, তবে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির বিশাল এবং বৈচিত্র্যময় সংগ্রহের কাছে তা ছিল সীমিত।
ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরির বইগুলো যেন আমার হাতে চাঁদ এনে দিয়েছিল। কেননা দেশি-বিদেশি লেখকদের বইয়ের সমাহার আমাকে বইয়ের জগতকে নতুন করে আবিষ্কার করার সুযোগ করে দেয়।
কিন্তু হঠাৎ জানতে পারি দেশব্যাপী ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র। এটি শুধু দুঃখজনকই নয়, এটি একটি বড় ক্ষতির শামিল। বিশেষ করে যারা বই কিনে পড়ার সুযোগ পায় না তাদের জন্য এই সিদ্ধান্ত যেন একটি আশার আলো নিভে যাওয়ার মত।
বই পড়ার অধিকার একটি মৌলিক সাংস্কৃতিক অধিকার। ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি বন্ধ হওয়া মানে অনেক মানুষ সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।
আমি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি বিনীতভাবে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই, তারা যেন এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করে।
শিশু থেকে শুরু করে কিশোর, মধ্যবয়সী থেকে বৃদ্ধ- সব বয়সের মানুষের কাছে এটি শুধুমাত্র একটি লাইব্রেরি নয়, বরং একটি আবেগ। গ্রামীণ অঞ্চলে, বিশেষ করে যেখানে লাইব্রেরির কোনো সুযোগ-সুবিধা ছিল না সেখানেও পাঠকের সংখ্যা বাড়াতে এই লাইব্রেরি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। মানুষের চিন্তা, চেতনা এবং সৃজনশীলতার বিকাশে এর অবদান সত্যিই অসামান্য।
এই সিদ্ধান্ত দেশের মননশীল বিকাশ এবং জ্ঞানের প্রসারকেও পিছিয়ে দেবে। অজপাড়াগাঁয়ের পাঠকদের কাছে বই পৌঁছে দেওয়ার যে বিপ্লব ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি শুরু করেছিল সেটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়া কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
প্রতিবেদকের বয়স: ১২। জেলা: বাগেরহাট।