৩০ মার্চ আসে সেই সুযোগটি। নির্ধারিত দিনে সকাল সকাল পৌঁছে যাই স্কুলে। বান্ধবীদের সাথে সাড়ে ৭টার মধ্যেই বাসে উঠে পড়ি। আটটা বাজার পর একে একে বাসগুলো ছাড়তে শুরু করে। আমাদের গন্তব্য সাভারের একটি রিসোর্ট।
সকাল বেলা, তাই রাস্তায় কোনো যানজট ছিল না। বন্ধুদের সাথে হৈহুল্লোর করতে করতে গান গাইতে গাইতে পনে নয়টার আগেই পৌঁছে যাই গন্তব্যে।
প্রথমেই নিজেদের ব্যাগপ্যাক রেখে রিসোর্টটা ঘুরে দেখি। বেশ কিছু ছবিও তুলি। এরপর সকালের নাস্তাটাও করি বন্ধুদের সাথে। এরপরই শুরু হয় এসএসসি ২০২২ বনাম এসএসসি ২০২৩ এর ফুটবল ম্যাচ। আমরা মাঠে বসে খেলা উপভোগ করি।
খেলা শেষে ছেলেরা সুইমিংপুলে যায় সাঁতার কাটতে আর মেয়েদের নিয়ে শুরু হয় চেয়ার আর বালিশ খেলা। দুটি খেলাতেই আমি এবং আমার ছোট বোন অংশগ্রহণ করি। এরপর আমরা যাই সুইমিংপুলে। প্রায় ঘণ্টা খানেক থাকি সেখানে। এরপর বান্ধবীরা মিলে আরো কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে দুপুরের খাবার খাই।
দুপুরের খাবারের পর আবার শুরু হয় খেলাধুলা। নবম, দশম শ্রেণির ছাত্রদের জন্য ছিল ‘মোরগ লড়াই’। পুরুষ শিক্ষক এবং অভিভাবকরা অংশগ্রহণ করেন ‘হাড়ি ভাঙা’ খেলায়। নারী শিক্ষক এবং অভিভাবকরা চেয়ার খেলায় অংশগ্রহণ করেন।
খেলাধুলার পর্ব শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করার জন্য বেশ কিছু গান ও কবিতা আবৃত্তি রিহার্সাল করেছিলাম আগের দিন। তবে যাত্রাপথে বন্ধুদের সাথে খালি গলায় এত জোরে গান গেয়েছি যে গলা ভেগে গিয়েছিল। তবুও ভাঙা গলা নিয়েই একটি কবিতা আবৃত্তি করি।
আমরা স্কুলের উদ্দেশ্যে রওনা হই সন্ধ্যা ছয়টার দিকে। সারাদিন বন্ধুরা মিলে অনেক মজা করেছি। অনেকেই মনে করেন শিক্ষা সফর বুঝি শুধু ঐতিহাসিক স্থানগুলোতেই হয়। কিন্তু শিক্ষা মানে শুধুই ইতিহাস জানা নয়।
আমার মতে, প্রত্যেকটা সফরই শিক্ষা সফর। আমাদের এই শিক্ষা সফর কোনো ঐতিহাসিক স্থান কিংবা জাদুঘরে না হলেও এখান থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পেরেছি। সবচেয়ে বড় কথা, করোনা মহামারিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে মানসিক যন্ত্রণা সৃষ্টি হয়েছিল তা অনেকাংশেই কাটিয়ে উঠা গেছে।