
একদিন এই শিশুরাও বড় হয়ে সমাজ ও দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নেবে। তাদের বেড়ে ওঠার পথটাকে মসৃণ করে দিতে হবে। যে শিশুরা মহামারির জন্য শিক্ষাঙ্গন থেকে ঝরে পড়ল তাদের ফেরাতে কাজ করতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল পরিবারের শিশুদের উপার্জনের দিকে মনোযোগ দিতে হয় ছোটবেলা থেকেই। ক্ষুধা নিবারণ করতে দরিদ্র পরিবারের শিশুদের কাজের সন্ধানে যেতে হয়। গাড়ি মেরামতের কাজ থেকে শুরু করে হোটেল, চায়ের দোকান, বাসাবাড়ির কাজ, ইট-পাথর ভাঙাসহ অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় শিশুশ্রমিক।
এসব কাজ করার ফলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শিশুরা শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ পায় না। শুধু তাই নয়, তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
আমি স্কুলের বইতে পড়েছি, শিশু অধিকার আইনের ৩২ ধারা অনুযায়ী, “ঝুঁকিপূর্ণ কাজ, অর্থনৈতিকভাবে শোষণ শিশুদের অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেয়। শিশুদের সামাজিক উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টি করবে যেসব, সেসব বিপদ থেকে শিশুদের রক্ষা করতে হবে।”
২৮ ধারায় শিশুদের শিক্ষা লাভের অধিকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার কথাও বলা আছে। কিন্তু, করোনা মহামারিতে পুরো বিশ্বই স্থবির হয়ে যাওয়ায় আয় কমে গেছে সাধারণ মানুষের। দীর্ঘ সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এবং বাবা-মায়ের আয় কমে যাওয়ায় স্কুল খোলার পর অনেক শিশুই আর ক্লাসে ফেরেনি।
এই শিশুদের অধিকাংশই যুক্ত হয়েছে শশ্রমে। কেউ তাদের আয় দিয়ে পরিবারকে সাহায্য করে, আবার কাউকে কাউকে ধরতে হয়েছে পুরো পরিবারের হাল।
ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনও আমার নজরে এসেছে। যেখানে সতর্ক করে বলা হয়েছে, মহামারির কারণে ২০২২ সাল শেষ হওয়ার আগেই বিশ্বব্যাপী আরো ৯০ লাখ শিশু শ্রমে যুক্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। যেখানে মহামারির আগে অনেকটা কমিয়ে আনা গিয়েছিল শিশুশ্রম।
এই পরিস্থিতির লাগাম টেনে ধরতে বেশ শক্তভাবে। শিশুদের ভবিষ্যতগুলো এভাবে নষ্ট হতে পারে না!