এবারের এসএসসি নিয়ে আমার যেমন রয়েছে প্রাপ্তি, তেমনি রয়েছে অপ্রাপ্তি। প্রাপ্তির খাতায় ঘুরে ফিরে একটি বিষয়ই চলে আসে, তা হচ্ছে আর কালক্ষেপণ না করে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অন্তত পরীক্ষা আয়োজন করেছে।
সকল বিষয়ে না হোক, সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে হলেও মূল্যায়ন তো হলো। আমার দৃষ্টিতে অটোপাশের চেয়ে সংক্ষিপ্ত সিলেবাসে মূল্যায়ন ঢের ভালো। আর প্রান্তিক অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত শিক্ষার্থীরা, যারা করোনাকালীন আরও বেশি পিছিয়ে পড়েছিল তাদের জন্যও হয়ত অত্যন্ত সহায়ক ছিল এই সংক্ষিপ্ত সিলেবাস।
তবে অপ্রাপ্তির অঙ্কটাও বেশ বড়। করোনাকালীন আমার বেশ কিছু সহপাঠির কাঁধে এসে পড়ে নিজ নিজ পরিবারের দায়িত্ব। তাই বাধ্য হয়ে শিশুশ্রমে যোগ দিয়েছে তারা। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনক বিষয় হচ্ছে তাদের আর ফেরা হয়নি স্কুলে।
তাছাড়া এক সহপাঠি কিশোর গ্যাংয়ের সাথে জড়িয়ে শেষ পর্যন্ত নিজের প্রাণটাই দিয়ে দিতে হলো। অন্য এক সহপাঠি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস দিয়ে আজ আইনের হাতে। তাদের আর বসা হয়নি পরীক্ষার আসনে। তাছাড়া পত্রিকা কিংবা টেলিভিশন খুললেই দেখা যায় মহামারির সময়ে বাল্যবিয়ের খবর। এজন্য অনেক শিক্ষার্থীরই দেওয়া হয়নি এসএসসি পরীক্ষা।
অপ্রাপ্তিগুলো সাথে নিয়েই দিতে যাই এসএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষার প্রথম দিন কেন্দ্রে ঢোকার সময় মানতে হয় কঠোর স্বাস্থ্যবিধি। কিন্তু পরের পরীক্ষাগুলোতে সে ব্যবস্থা ছিল না। তাছাড়া যে কক্ষে বসে পরীক্ষা দেই সেখানে খুবই গাদাগাদি করে বসতে হয়েছিল। মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনায় বিষয়টি ছিল দৃষ্টিকটু। দেখতে দেখতে কেটে যায় পরীক্ষার দিনগুলো। পরীক্ষা তো শেষ। কিন্তু এর অপ্রাপ্তিগুলো কি শেষ হওয়ার? প্রশ্নটা মনে থেকেই যায়।