স্কুলে পড়াকালীনই অনেক শিশু ধূমপানে জড়িয়ে পড়ে। বন্ধুদের প্ররোচনা উপেক্ষা করতে পারে না অনেকেই। আর কিশোর বয়স যেহেতু কৌতুহল তৈরি করে আমাদের মনে, তাই ধূমপান জিনিসটা কেমন এটা অনেকেই পান করে দেখতে চায়। আর নিষিদ্ধ জিনিসে তো বরাবরই আমাদের আকর্ষণ বেশি হয়ে থাকে। এসব নানা কারণে অল্প বয়সেই নিকোটিন নামের বিষ নিচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী।
একটা জিনিস আমি লক্ষ্য করেছি, অনেক শিক্ষকও আমাদের সামনেই ধূমপান করেন। সংখ্যাটা খুব বেশি নয়। ক্যান্টিন বা স্কুলের আশেপাশেই দেখেছি তারা ধূমপান করছেন। বিষয়টা দৃষ্টিকটু মনে হলেও আমি এটা নিয়ে তেমন ভাবে চিন্তা করিনি। একদিন আমার এক বন্ধুকে ধূমপানে বাধা দিতে গেলে সে আমাকে বলে, স্যারও তো ধূমপান করে। তাহলে এটা খারাপ হবে কেন? এরপর আমি আর তেমন কোনো জবাব খুঁজে পাইনি।
২০১৩ সালে বেসরকারি সংগঠন ‘ক্যাম্পেইন ফর ক্লিন এয়ার’ একটি জরিপ হ্যালোতে আমি দেখলাম। যেখানে বলা হয়েছে, ২০১২ সাল থেকে ২০১৩ সালের মধ্যে এক বছরে কিশোর ও তরুণ ধূমপায়ী বেড়েছে ১১ শতাংশ। আর ৫৬ শতাংশ ১৮ বছরের আগেই ধূমপান শুরু করে।
'প্রকাশ্যেই ধূমপান করছে স্কুল পড়ুয়ারা' শিরোনামের সরেজমিন প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, রাজধানীর ন্যাশনাল কলেজ, ঢাকা কমার্স কলেজ, আইডিয়াল কমার্স কলেজ, ঢাকা কলেজ, সিটি কলেজসহ বেশ ক’টি প্রতিষ্ঠানের কয়েক গজের মধ্যেই সিগারেট ব্যবসায়ীদের রমরমা ব্যবসা। যেখানে দুই থেকে ১০ টাকায় মিলছে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের একটি সিগারেট। শিক্ষার্থীদের কাছেও তারা বিক্রি করছেন অবাধে।
পরিস্থিতি যখন এমন তখন ধূমপানের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের ভূমিকা আরও জোড়ালো হওয়া উচিত। তারা সচেতন করতে পারেন শিক্ষার্থীদের।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিওএইচও) তথ্য অনুসারে প্রতিবছর তামাকজাতীয় দ্রব্যের কারণে বাংলাদেশে ৫৭ হাজার মানুষ মারা যায়। পঙ্গু হয় আরো তিন লাখ ৮২ হাজার মানুষ। এই তথ্যগুলো শিক্ষার্থীদের কাছে তুলে ধরা উচিত। যে বস্তুটি মৃত্যু ঘটায়, স্ট্রোকের কারণ হয়ে দাঁড়ায় সেটি বর্জন করাই বুদ্ধিমানের কাজ।