যে বয়সে একটি শিশুর পড়াশোনা করার কথা, পৃথিবীটাকে জানার কথা, সেই বয়সে যদি তাকে বিয়ের মুখোমুখি করা হয় তবে এরচেয়ে বর্বর সিদ্ধান্ত আর কিছু হতে পারে না।
অনেকের মুখেই শোনা যায় মাস ছয়েক গেলে সব মানিয়ে যাবে। কিন্তু এটা যে কতটুকু মানসিক চাপ ও অস্থিরতার বিষয় সেটা তারা অনুধাবন করার চেষ্টা করেন না। শুধু তাই নয় শারীরিক নানা জটিলতায় পর্যন্ত ভুগতে হতে পারে কিশোরীকে। তাছাড়া অপ্রাপ্ত বয়সে গর্ভবতী হলে সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে মা ও শিশুর মৃত্যুঝুঁকি তো থাকেই।
দেশের আইন অনুসারে বাল্যবিয়ের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের জন্য রয়েছে জেল জরিমানার বিধান।
আইনকে ফাঁকি দিতেই অনেকেই ছলচাতুরির আশ্রয় নেয়। কখনো বয়স বাড়িয়ে ভুয়া সনদ তৈরি করা, কাজী কিংবা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিকে পক্ষে নেওয়ার মতো ঘটনা তো আছেই। এমনও হয়েছে প্রশাসন বিয়ে বন্ধ করার পরও গভীর রাতে অনেকটা আড়ালে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
যে কিশোরী বাল্যবিয়ের শিকার হয়, তার পক্ষে সব সময় প্রতিবাদ করার সামর্থ্য থাকে না। পারিবারিক নানা চাপ তার ওপর আরোপ করা হয়। আত্মীয় স্বজনরা তাকে যেমন বোঝানোর চেষ্টা করে তেমনি চাপও প্রয়োগ করে তার ওপর। তার ভরণ পোষণ বন্ধের হুমকিও দেওয়া হয়। এসবের পর একজন কিশোরীর পক্ষে আসলে তেমন কিছু করার থাকে না।
আমি মনে করি বাল্যবিয়ে বন্ধে প্রশাসনকে সজাগ থাকতে হবে। কোথাও বাল্যবিয়ে বন্ধ করার পরও খোঁজ নিতে হবে। মেয়েটাকে সব ধরনের সমর্থনও দেওয়া উচিত। এক্ষেত্রে স্কুল শিক্ষকরা বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন। পরামর্শ দেওয়ার পাশাপাশি কিশোরীকে আইনী সহায়তা পেতেও সাহায্য করতে পারেন তারা।