আমাদের চোখের সামনে হাজারো শিশুকে প্রতিদিন কাজ করতে দেখছি, অধিকার থেকে বঞ্চিত হতে দেখছি। কিন্তু আমরা বিষয়গুলো খেয়ালও করি না।
বইতে অনেক পড়েছি, পরীক্ষায় লিখেছি, বিতর্ক প্রতিযোগিতায় শিশুশ্রম নিয়ে কথাও বলেছি। বিতর্কের বিপক্ষে বহু শক্ত যুক্তি দেখিয়েছি। ফলে আমাদের দল জিতেছে, আমরা মেডেল ও সার্টিফিকেট পেয়েছি। বাসায় এনে সেগুলো সাজিয়েও রেখেছি নিজের কৃতিত্বের স্মারক হিসেবে। কিন্তু কোনোদিন কি আমরা ভেবে দেখেছি যে এই শিশুশ্রম নিয়ে এতগুলো কথা বললাম, যার বিরুদ্ধে এত যুক্তি দেখিয়ে নিজের অর্জনের ঝুলিকে আরো ভারি করলাম তা বন্ধে আমরা সত্যিই কোনো পদক্ষেপ নিয়েছি কিনা? না নিলে এত জ্ঞান, এত পড়াশোনা কেন?
আমাদের শিক্ষাকে সীমাবদ্ধ করে ফেলা উচিত নয়। বাস্তবতা পরিবর্তনের জন্য কাজ করাও প্রয়োজন। এত টক শো হয়, কলাম লেখা হয়, আলোচনা সভা হয়। সবকিছুরই দরকার আছে। আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান বের হয়ে আসে। কিন্তু আমাদেরকে পাশাপাশি মাঠে বাস্তবতার সাথে কাজও করা উচিত।
কিছু কিছু সমস্যা এতই বড় যে এটা শুধু সরকারের পক্ষে সমাধান সম্ভব হয়ে ওঠে না। সমাজের সকলের প্রচেষ্টা দরকার হয়ে পড়ে। শিশুদের জন্য কিছু করা মানে দেশের জন্য অবদান রাখা।
অনেকের আবার মনে হয় দেশের জন্য করতে হবে কেন? আসলে মাতৃভূমির প্রতি দায়বদ্ধতার তাগিদ ধর্ম থেকে শুরু করে রাষ্ট্র ব্যবস্থা সবখানেই আছে। যে দেশ আমার, তাকে পরিবর্তনে যদি আমার কোনো অবদান বা হাতের ছোঁয়া থাকে সেটা আমার গৌরব। দেশের জন্য যারা অবদান রাখেন, দেশ কখনো তাদের ভুলে যায় না৷
শিশুশ্রম রোধে যেমন সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে ঠিক তেমনি নিজেদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে। তার তাহলেই সব শিশুর বই নিয়ে স্কুলে যাওয়ার দৃশ্য আর স্বপ্ন থাকবে না, বাস্তবে ধরা দেবে।