মাত্র দেড় মাস বয়সের বাচ্চাটিকে মে মাসের ২৮ তারিখে আমাদের বাসায় নিয়ে আসি।
এটির নাম রাখি লুসিফার দ্য পিওক৷ আমরা মূলত পিওক বলেই ডাকি।
প্রথম প্রথম এসে একটু ভয়ে ছিল পিওক। প্রথম রাতে তো ওকে খাওয়াতে খুব কষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। তখন আকারেও এত ছোট ছিল, আমার হাত গলে বের হয়ে যেতে পারত। তখন তেমন একটা কিছু করত না, শুধু হেলান দেওয়ার মতো কিছু পেলে সেটাতে হেলান দিয়ে ঘুমিয়েই থাকত। প্রথম ৩-৪ দিন বলতে গেলে শুধু ঘুমিয়েই কাটিয়েছে সে।
এরপর থেকে পিওক আমাদের সাথে পরিচিত হয়ে গেল। খেলাধুলা করতে ও খুব পছন্দ করে। দিনের অনেক সময় ঘুমিয়ে কাটালেও যখন সজাগ থাকে খুব খেলাধুলা করে। বাসার ভেতর দিয়ে শুধু লাফিয়ে দৌড়ে বেড়ায়। কোলে বেশি থাকতে পছন্দ করে না। ট্যিসু পেঁচিয়ে বা ফোম দিয়ে বলের মতো কিছু একটা করে দিলেই সে ফুটবল খেলা শুরু করে দেয়। আবার প্রায়ই দৌড়ে এসে পায়ে কামড় দেয়। তখন বকা দিলে লেজ গুটিয়ে পালায়।
ও অনেক সময় একা খেলতে খেলতে থেমে যায়, আমাদের কাছে চলে আসে। অর্থাৎ তখন আমাদের ওর সাথে খেলতে বলে।
ওর প্রিয় খেলাগুলোর একটা হলো সুতা দিয়ে খেলা। সুতা, বেল্ট, দড়ি এ জাতীয় কিছু পেলেই খেলায় মেতে ওঠে। তাই আমার বোন ওকে একটা কলমে কিছু চিকন কাগজ লাগিয়ে দিয়েছে, সেটা দিয়ে প্রচুর খেলাধুলা করে। আবার বাঘ বা বিড়ালের মতো কোনো পুতুল ওকে দিলে সেটাকে কামড়ে দেয়।
নিজের খাওয়ার জায়গাটা খুব ভালো চেনে ও। ক্ষুধা পেলেই সেখানে চলে যায়। খাবার না পেলে পা ধরে টানাটানি করে, মায়ের কাছে গিয়ে ডাকাডাকি করে। ওকে খাওয়াতে প্রতিদিন ভোরে উঠে যান আমার মা।
আমাদের একঘেঁয়ে জীবনটাকে আনন্দের করে দিয়েছে পিওক। ওকে নিয়ে খেলতে, ওকে আদর করতে, ওকে খাওয়াতে, ওকে পটি করাতে, গোসল করাতে দিনের অনেক সময় চলে যায় পরিবারের সবার। তারপরও এতেই আমরা আনন্দ খুঁজে পাই।