ঘুরে এলাম ‘মৈনট ঘাট’ (ভিডিওসহ)

সময়, সুযোগ আর সব কিছু মিলে গেলে আমি আমার পরিবার পরিজনের সাথে কোথাও না কোথাও বেড়াতে যাই। এবার গিয়েছিলাম ঢাকা থেকে মাত্র ষাট কিলোমিটার দূরে দোহার উপজেলার মৈনট ঘাটে। অনেক দিন ধরেই যাই যাই করেও যাওয়া হচ্ছিল না।
ঘুরে এলাম ‘মৈনট ঘাট’ (ভিডিওসহ)

আমাদের এবারের গন্তব্য মিনি কক্সবাজার খ্যাত মৈনট ঘাট। এক শুক্রবার সকালে আমরা ঢাকা থেকে রওনা হলাম। বুড়িগঙ্গা সেতু পার হয়ে, পিচ ঢালা পথ দিয়ে আমরা চললাম মৈনট ঘাটের দিকে।

সূর্য তখন তাপ ছড়াচ্ছে কেবল। রাস্তার দুই পাশে সারি সারি সবুজ গাছ, ফসলের জমি, ছোট ছোট জলাশয়, খরের গাদা, স্থানীয় হাট বাজার, আর কোথাও কোথাও মানুষের জটলা দেখতে দেখতে আমরা পৌঁছে গেলাম ‘মিনি কক্সবাজার’।

এক দিকে সবুজে ঘেরা জনপদ দোহার, অন্য প্রান্তে তার পশ্চিম দিক দিয়ে বয়ে চলেছে পদ্মা নদী। ভাঙতে ভাঙতে যে ঠাঁই নিয়েছে এই উপজেলার চর মোহাম্মদপুরে। পলি আর বালু জমে জমে তৈরি হয়েছে বিস্তীর্ণ চর। স্থনীয়দের কাছে এর নাম মৈনট ঘাট। যা দেখতে সমুদ্রের বেলাভূমির মতো।

ছোট ছোট ঢেউ এসে এখানে আছড়ে পরে। সামনে তাকালে অবারিত জল রাশি, ছুটে চলা স্পিডবোট, সূর্য ডোবার দৃশ্য কক্সবাজারের কথাই মনে করিয়ে দেয়। আমরা যদিও নদীতে নামিনি কিন্তু বিভিন্ন বয়সী মানুষ এখানে বেড়াতে এসে নদীর জলে গা ভিজিয়ে নেয়। ঘুরে দেখে চারিদিক। আনন্দ করে।

টঙ্গী থেকে বাবা-মায়ের সাথে বেড়াতে এসেছে পাঁচ বছর বয়সী তামিমা। সে জানায় এখানে এসে তার ভালো লাগার কথা।

চরের কোনো কোনো অংশে প্রাকৃতিকভাবেই বেড়ে উঠেছে নানা জাতের গাছ। মৌসুম ভেদে চাষ হচ্ছে সরিষা বা তিল। আবার ইঞ্জিনচালিত নৌকায় নদী পাড়ি দিয়ে চলে যাওয়া যায় ফরিদপুরের চরভদ্রাসন।

এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে আর চরভদ্রাসনে যেতে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রতিদিন অনেক লোকজনের সমাগম হয়।

বিশেষ করে ছুটির দিনে বেশি ভিড় হয় বলে জানান স্থানীয়রা। তবে আমার মনে হয় এই ‘মিনি কক্সবাজার’ জুড়ে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে দোকান, বাসস্ট্যান্ড, রেস্টুরেন্ট। বসানো হয়েছে নাগরদোলা। যেখানে সেখোনে ফেলা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা, উচ্চ শব্দে বাজানো হচ্ছে গান। এই অব্যবস্থা এর পর্যটন মূল্য নষ্ট করছে।

ঢাকা থেকে মৈনট ঘাট পর্যন্ত রয়েছে ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থা। এখন প্রয়োজন সুন্দর পরিকল্পনা আর সঠিক পদক্ষেপ।

সন্ধ্যা নামতে না নামতেই আমরা যাত্রা করলাম ঢাকার পথে। ঢাকার ইট পাথরের জীবন থেকে স্বল্প সময়ে প্রকৃতির কাছাকাছি যেতে চাইলে মৈনট ঘাট হতে পারে একটি পছন্দের জায়গা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com