সুসময় কিংবা দুঃসময় যখনই মানুষ অবসর পায় তার নিজস্ব কিছু কাজ করে। নিজের শখ পূরণ করে সময়টুকুকে আনন্দময় করে তোলে। শখ মানুষভেদে ভিন্ন হয়।
এটা সম্পূর্ণ একজন ব্যক্তির রুচি আর তার পরিবেশের ওপর নির্ভর করে। কারো শখ বাগান করা, কারো সিনেমা দেখা কিংবা আড্ডা দেওয়া ইত্যাদি। কিন্তু আমার প্রিয় শখ বই পড়া আর ভ্রমণ করা।
দৈনন্দিন জীবনে মানুষ বৈচিত্র্য চায়। আমার মতে এই বৈচিত্র্য দিতে পারে দুটি জিনিস। একটি হলো ভ্রমণ, অপরটি বই পড়া।
বর্তমানে মহামারির এই দুঃসময়ে ভ্রমণ আমাদের জন্য নিরাপদ নয়। তাই নিজেকে ও সবাইকে নিরাপদ রাখতে ভ্রমণ থেকে বিরত আছি। এমন একটা সময়ে শখ হিসেবে বেছে নিয়েছি বই পড়াকে।
এই বিষাদ, দুঃখ-বেদনা, কষ্ট, রোগ-শোক সবকিছু থেকেই মনে শান্তি ও প্রেরণা জোগায় বই। বই আমার নিত্যদিনের বন্ধুতে পরিণত হয়েছে। মাঝে মাঝে ঘরবন্দী জীবনে হতাশা, নৈরাশ্য, অবসাদ কিংবা কাজে অনীহা বোধ করি। ঠিক তখনই বইয়ের সান্নিধ্যে আসি, যা আমাকে সব বিরক্তিকর সময় থেকে থেকে মুক্তি দেয়।
নির্মল আনন্দ লাভের উৎস হিসেবে বইয়ের বিকল্প নেই। পারস্যের কবি ওমর খৈয়ামের একটা উক্তি পড়েছিলাম।
তিনি বলেছেন, "রুটি মদ ফুরিয়ে যাবে, প্রিয়ার কালো চোখ ঘোলাটে হয়ে যাবে। কিন্তু বইখানা অনন্ত যৌবনা, যদি তেমন বই হয়।"
জ্ঞান সংগ্রহের প্রথম উপায় বই পড়া। বই অপূর্ণকে করে পূর্ণ, অচেনাকে করে চেনা এবং অজানাকে জানা। আবার বই আমাদেরকে অনুভূতি প্রবণ করে তোলে এবং করে তোলে সংবেদনশীল।
শরৎচন্দ্রের দেবদাস পড়েছি, যেখানে দেবদাস আর পার্বতীর করুণ কাহিনী সত্যিই আমাকে ব্যথিত করে তুলেছিল। আবার বিজ্ঞান বিষয়ক বই পড়ে জেনেছি প্রযুক্তির অগ্রগতির কথা।
বই এখন আমার নিত্যসঙ্গী, সুখ -দু:খ কিংবা হাসি কান্নার উৎস।