অনলাইন গেইমের নেশা!

জীবনের গুরুত্বপূর্ণ একটি সময় কৈশোরকাল। এই সময়টাতেই মানুষ বয়ঃসন্ধিকালের হাত ধরে পরিপক্বতার দিকে এগিয়ে যায়।
অনলাইন গেইমের নেশা!

এই সময়েই ঘটে শারিরীক ও মানসিক পরিবর্তন। গুরুত্বপূর্ণ এই সময়টা যদি হেলায় ফেলায় কাটে তাহলে তা পরবর্তী জীবনে বড় প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে হয়।

বয়ঃসন্ধিকাল সম্পর্কে সুস্পষ্ট জ্ঞান না থাকায় অনেক কিশোর-কিশোরী মানসিক হীনমন্যতায় ভোগে। যার ফলে তাদের মাঝে বিষণ্ণতা কাজ করে এবং তারা বদমেজাজী বা খিটখিটে স্বভাবের হয়ে যায়। বইয়ে পড়েছি, এ সময় অনেকেই ঝুঁকিপূর্ণ কাজে এগিয়ে যায়। কেউ তার খারাপ কাজে বাধা সৃষ্টি করলে সেটার প্রতি আগ্রহ আরও বেড়ে যায়।

এ সময়ের বড় একটি অন্যতম উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে অনলাইন গেইমকে। আমার মনে হয় অনলাইন গেইমের প্রতি আসক্তি ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়ছে।

আমার চারপাশের অভিজ্ঞতা বলে, পরিবার থেকে এসব গেইম খেলতে বাধা দেওয়ায় কিশোর-কিশোরীরা অভিভাবকদের সাথে অশোভন আচরণও করছে। খবরে মাঝে মাঝে দেখি শেষ পরিণতিটাও ভালো হচ্ছে না অনেকের।

এভাবে চলতে থাকলে তা আমাদের দেশের জন্য হুমকি। দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যাদের প্রস্তুত হওয়ার কথা তাদের এমন পরিস্থিতি কোনোভাবেই আশা করে না কেউ।

উদ্ভাবনী শক্তি আর বুদ্ধিমত্তায় এগিয়ে যাওয়ার কথা যে বয়সে সেটা এমন হওয়ার কথা নয়। আরও শৃঙ্খল আর গোছানো হওয়ার কথা।

এটা একটা সংকট হয়ে গেছে বলে মনে করি। অভিভাবকদের দায় এড়ানোর সুযোগ নেই। বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণ করে শিশু-কিশোরদের এসবের কুফল সম্পর্কে জানাতে হবে। স্মার্টফোন ব্যবহার যাতে অপব্যবহার না হয়ে উঠে সেটার তদারকির দায়িত্বটা পরিবারের।

সরকারও এক্ষেত্রে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করা উচিত। দেশে একটা সংকট তৈরি হলে সবাই মিলেই এটা রুখে দিতে হয়। সরকারের উচিত সহিংসতা ছড়ানো অনলাইন গেইমগুলো বন্ধ করে দেওয়া। একটা নিয়ম নীতিমালার আওতায় আনা উচিত।

আশার খবর যে, আজ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম থেকে জানতে পারলাম ফ্রি ফায়ার ও পাবজির মতো জনপ্রিয় দুই গেইম বন্ধ হচ্ছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে এরইমধ্যে বিষয়টি নিয়ে সুপারিশ করেছে শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। দুই মন্ত্রণালয় থেকে এমন সুপারিশ পেয়ে এ নিয়ে আলোচনা করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।

এমনটা হলে এবং সরকার কঠোর অবস্থানে গেলে অবশ্যই এটি সুফল বয়ে আনবে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com