তিনি জানালেন, তাদের সংগঠনের বার্ষিক বনভোজন রয়েছে। ১৯ তারিখ সকালে আমাকেও তাদের সাথে যেতে হবে।
কোথায় যাওয়া হবে তা ঠিক হয়নি, তবে একদিনের সফরটা টাঙ্গাইলের আশেপাশে কোথাও হবে।
শুনেই মনটা ভরে গেল, আক্ষরিক অর্থে আনন্দে লাফিয়ে উঠলাম। কারণ ঘুরতে খুব ভালোবাসি। নতুন কোথাও যাব, নতুন কিছু দেখব, অনেক ছবি তুলব। এটা তো অনেক আনন্দের।
ট্যুরের দিন খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠি। এরপর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখি মাইক্রোবাস যাওয়ার জন্য তৈরি, সবাই চলে এসেছে। আমিও উঠে পড়লাম তাদের সাথে। এরপর যমুনা সেতু পার হয়ে সিরাজগঞ্জের একটি রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেয়ে নিলাম। সবুজের মাঝ দিয়ে আমাদের গাড়ি চলছে কুষ্টিয়ার পথে।
চোখ জুড়ানো সেই দৃশ্য দেখতে দেখতে নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় পৌঁছুতে না পৌঁছুতে গাড়ির পেছনের চাকা নষ্ট হয়ে গেল। এই ফাঁকে গাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়লাম সবাই। মহাসড়কের দুই পাশের জমিতে যতদূর চোখ যায় শুধু পেঁয়াজ আর রসুনের চাষ হয়েছে। আহা এ যেন সবুজের স্বর্গ রাজ্য!
যেতে যেতে পাবনায় পৌঁছে শুক্রবারের জুম্মার নামাজ পড়ে নিলাম সবাই। এরপর লালন শাহ ব্রিজ পাড় হওয়ার সময় ব্রিটিশদের তৈরি হার্ডিঞ্জ ব্রিজও দেখলাম।
এ ব্রিজ থেকে দেখা মিলল রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের। এরপর সোজা কুষ্টিয়ার বাউল সাধক লালন শাহর আখড়া। আগর বাতির অদ্ভুত সুবাসে গোল হয়ে বসে ঢোল তবলায় গান ধরেছেন লালন শিল্পীরা। গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশে মিলন হবে কত দিনে গানে হারিয়ে যাচ্ছিলাম বারবার।
শেষ বেলায় গিয়ে পৌঁছালাম কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ রবীন্দ্র কুঠি বাড়িতে। ঢুকতে না ঢুকতে আমাদের বেরিয়ে যেতে বলা হলো। বিকেল পাঁচটা নাকি শেষ সময়। তাড়াতাড়ি করে বাড়ির সামনে শুধু কয়েকটা ছবি তুলে বের হতে হলো। ঘুরে দেখা হলো না কুঠি বাড়ি। আক্ষেপ রয়ে গেল মনে।