জমিদারবাড়ি মসজিদে মুগ্ধতা

মহামারির কারণে বাড়িতে বন্দী থাকতে ভালো লাগছিল না। মাথার মধ্যে একটা কথা ঘুরপাক খাচ্ছে, কখন স্কুল খুলবে, কখন দেখা হবে বন্ধুদের সাথে। সবারই একই অবস্থা। তাই সব বন্ধুরা মিলে ঠিক করলাম ঘুরতে যাব।
জমিদারবাড়ি মসজিদে মুগ্ধতা

ঘুরতে যাওয়ার জন্য বেছে নিলাম আমাদের পাশের ইউনিয়ন জামালপুরের জমিদারবাড়ি। আমার সাথে ছিল রায়হান, তাজু, শামিম, আরিফুল, রবিউল, বিশাল, বাঁধন, নাজমুল, সাব্বির।

শুক্রবার দুপুরে নামাজের পর চলে আসি পীরগঞ্জ থানার সামনে। এক এক করে সবাই আসার পর আমরা জামালপুর ইউনিয়নের গাড়ি ধরলাম। ৩০ মিনিট পর আমরা পৌঁছে গেলাম জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদে।

মসজিদের উপরে বড় আকৃতির তিনটি গম্বুজ আছে। গম্বুজের শীর্ষে চমৎকার কারুকাজ করা। এ মসজিদের অন্যতম আকর্ষণ হলো মসজিদের মিনারগুলোর নকশা। মসজিদের ছাদে মোট ২৮টি মিনার আছে। একেকটি মিনারের উচ্চতা প্রায় ৩৫ ফুট এবং প্রতিটিতে নানা নকশা করা রয়েছে।

মসজিদটি চারটি অংশে ভাগ করা। অংশগুলো হলো মূল কক্ষ, মূল কক্ষের সঙ্গে ছাদসহ বারান্দা, ছাদবিহীন বারান্দা এবং ছাদবিহীন বারান্দাটি অর্ধপ্রাচীরে বেষ্টিত হয়ে পূর্বাংশে মাঝখানে চার থামের উপর ছাদ বিশিষ্ট মূল দরজা। খোলা বারান্দার প্রাচীরে এবং মূল দরজার ছাদে ছোট ছোট মিনারের নানান নকশা রয়েছে।

মূল কক্ষের কোণগুলো তিন থাম বিশিষ্ট। এর জানালা দুটি, দরজা তিনটি ও কুলুঙ্গি দুটি। পুরো মসজিদটির ভেতরে ও বাইরের দেয়ালগুলোতে প্রচুর লতাপাতা ও ফুলের নকশা রয়েছে।

জামালপুর ইউনিয়নেই রয়েছে ঐতিহাসিক জামালপুর জমিদারবাড়ি। ভারতের পশ্চিম বঙ্গের তৎকালীন তাজপুর পরগনার রওশন আলীর বংশধর জামাল উদ্দীন এই অঞ্চলের জমিদারি পেয়ে ১৮৬২ সালে বাড়িটির ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন। কিন্তু বাড়ির নির্মাণ শেষ হওয়ার পূর্বেই ১৮৬৭ সালে বাড়ির সাথে একটি মসজিদের নির্মাণ শুরু করেন। মসজিদের নাম রাখা হয় জামালপুর জমিদারবাড়ি জামে মসজিদ এবং এই মসজিদ তৈরির কারণেই নাকি জমিদারবাড়ির নির্মাণ কাজ অসমাপ্ত থেকে যায়।

বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত এ মসজিদে এক সাথে প্রায় ৩০০-৬০০ জন মুসল্লি নামাজ পড়তে পারে। বর্তমানে জমিদার পরিবারের বংশধররা জমিদারবাড়ি ও মসজিদ দেখাশোনার দায়িত্বে আছেন।

মসজিদটির নকশা আমায় মুগ্ধ করেছে। দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদটা দেখা আমার জন্য দারুণ এক অভিজ্ঞতা। বেশ কিছু ছবি তুলে স্মৃতিগুলো বন্দী করেছি আর সেই স্মৃতিগুলো পুঁজি করে বাড়ি ফিরে এসেছি।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com