সরকার শিক্ষাকে হাতের নাগালে এনে দিয়েছে। বিনামূল্যে বই, উপবৃত্তিসহ নানা সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। কিন্তু একটা শিশুর পরিবার যখন দারিদ্র্যতার সঙ্গে যুদ্ধ করে তখন একটু ভালো দিনযাপনের আশায় শিশুকে কাজে দিয়ে দেয়। অনেক পরিবারের চালিকা শক্তি আবার শিশুই। সংসারের পুরো দায়িত্ব তার কাঁধে।
এই কাজ করতে গিয়ে তারা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে জড়াচ্ছে। আইন আছে এর বিরুদ্ধে, কিন্তু তা প্রয়োগ করার অর্থ দাঁড়াবে ওই শিশু ও তার পরিবারকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া।
প্রতিটি শিশুই দেশের ভবিষ্যত। দুই বেলা খাবারের জন্য যদি এই ভবিষ্যতগুলো নষ্ট হয়ে যায় তবে এটা দেশের জন্য নিঃসন্দেহে ভয়ানক ব্যাপার। যে শিশুরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করছে, হাতে তুলে দিচ্ছে ভারি ভারি যন্ত্র কিংবা বিপদজনক সব কাজ তারা একটু অসতর্কতার জন্যই তো বড় রকমের ক্ষতির মুখোমুখি হতে পারে।
শিশুমন তো বাঁধাহীন। মুক্ত পাখির মতো উড়তে চায়, ঘুরে বেড়াতে চায়। সদা সতর্ক থাকার মতো দায়িত্ববোধ শিশুবয়সে আসে না। কাজ করতে গিয়ে একটি বড় দুর্ঘটনার শিকার হলে তার ভবিষ্যতটাই অন্ধকারে ঢেকে যাবে। একটি সুন্দর পৃথিবী নির্মাণে হয়ত সে অংশ নিতে পারবে না।
অনেক মুনাফা লোভী মালিকরাও শিশু শ্রমিক নিয়োগ দেয় এবং শিশুর পরিবারকে নানা লোভ দেখিয়ে আকৃষ্ট করে। ভরণপোষণের দায়িত্ব নিবে, ভবিষ্যত গড়ে দিবে- আরও কতকিছু বলে। তাদের মূল লক্ষ্যই হলো শিশুদের দিয়ে কম টাকায় কাজ করিয়ে নেওয়া যায় অনেক। শিশুরা প্রতিবাদ করতে পারবে না, কর্ম ঘণ্টার বেশি কাজ করানো যাবে, বেতন কম দিলেও হবে ইত্যাদি।
শিশুর কোমল দুটি হাতকে যদি নষ্ট করে দেওয়া হয় তবে তা কেবলই আফসোসের একটি বিষয় হবে রাষ্ট্রের জন্য। এই শিশুদের সুন্দর একটি পৃথিবী দিতে হবে। শিশুরাই পারবে দেশকে বদলে দিতে।
রোজগারে চলছে পরিবারের দু-মুঠো খাবার।শিশু শ্রমের থাবা থেকে এসব শিশুদের যদি না ফিরিয়ে আনা যায় তাহলে কিভাবে সমৃদ্ধ জাতি গঠন হবে সে প্রশ্ন থেকেই যায়।