গতবছর হঠাৎ নেমে আসে মহামারির ঘনঘটা। মলিন হয়ে যায় বাংলা নববর্ষের আনন্দ। বৈশাখী মেলা, আনন্দ আয়োজন, নাগরদোলা, ঘুরতে যাওয়া কিছুই হয়নি সেবার। ভেবেছিলাম পৃথিবী সুস্থ হয়ে উঠবে, এবার হয়ত আমরা আবার আগের মতো আনন্দ করতে পারব। কিন্তু না, তা হয়নি।
আমাদের এলাকায় আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ঐতিহ্যবাহী ‘নাপাইচন্ডীর মেলা’। এর সাথে জড়িয়ে আছে ভারতবর্ষের ইংরেজ বিরোধী আন্দোলনের ইতিহাস। এখানেই ওয়ারেন হেস্টিংসের সাথে যুদ্ধে নিহত হন সাধারণ প্রজাদের কাছে মা চন্ডী নামে পরিচিত ইতিহাসের অন্যতম সাহসী নারী চরিত্র দেবী চৌধুরাণী। এই মেলা এবারও উপজেলা প্রশাসন স্থগিত করেছে।
গতবছর প্রথমবারের মতো ঘরে বসেই পালন করতে হয় নববর্ষ। পান্তা ভাত, শুটকি ভর্তা, পাটশাক দিয়ে সবাই মিলে খাওয়ার পর যেন সময়ই কাটছিল না ঘরে। বার বার মনটা খারাপ হচ্ছিল। মনে আক্ষেপটা চেপে রেখে নিজেকে বোঝালাম পরের নববর্ষে অনেক আনন্দ হবে।
২০২১ সাল। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছিল কোভিড পরিস্থিতি। ঘোষণা করা হলো ৩০শে মার্চ থেকে খুলবে সকল
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। ভেবেছিলাম সব ঠিকঠাক হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু না। সবই যেন আবার অন্ধকারে। করোনাভাইরাস রোজই নতুন রেকর্ড গড়ছে। পৃথিবী আবার সুস্থ্য হয়ে উঠুক। আবার হয়ত ধরা দিবে নববর্ষ যেখানে আনন্দ হবে বাধভাঙা।
আনন্দে মনটা নেচে উঠেছিল এই ভেবে যে এবারের পহেলা বৈশাখ তবে সত্যিই রঙিন হবে। কিন্তু হঠাৎ করে আবারো পিলে চমকানো খবর হয়ে উঠলো করোনায় আক্রান্তের আর মৃত্যুর সংখ্যা। ৫ই এপ্রিল থেকে আবারো ঘোষণা করা হলো লকডাউন। মন্ত্রীপরিষদ বিভাগ থেকে বলা হলো এবারের পহেলা বৈশাখে জনসমাগম না করতে। রঙিন স্বপ্ন সাদাকালোতে পরিণত হতে খুব বেশি সময় লাগেনি।