আমার আনন্দ বাড়ি

লিখছি গত বছরের কথা। মহামারির জন্য যখন লকডাউন করা হলো সারাদেশ সে সময়ের কথা।
আমার আনন্দ বাড়ি

প্রথম দিকে বাসায় থাকতে খুবই ভালো লাগছিল। ধীরে ধীরে একটু খারাপ লাগতেও শুরু করে। স্কুলে যেতে পারছি না, বন্ধুদের সাথে এক সাথে সময় কাটাতে পারছি না, এসব কারণে বাসার প্রতি বেশ রাগ জমতে শুরু হলো।

বন্ধুদের সাথে ফোনে কথা বললেই সবাই একই কথা বলত। ‘উফ! বাসায় আর ভালো লাগে না! বাসাটা খুবই বোরিং!’

নিজেকে আমার মনে হচ্ছিল জেল খানার কয়েদি। কিন্তু হঠাৎ আমার সম্পুর্ণ ধারণাই পালটে গেল।

একদিনের কথা মনে পড়ছে আজ। খুব জোরে বৃষ্টি হচ্ছিল। আকাশে মেঘ গর্জন করছিল। ভয়ও লাগছিল বেশ! হঠাৎ জানালা দিয়ে তাকিয়ে দেখি দুটি কাক কোনো রকমে জানালার সানসেটে গা ঢেকেছে। মেঘের গর্জনে ওরা ভিজে চুপসে গিয়েছিল।

ঠিক সেই মুহুর্তে সারা বাসায় একবার চোখ বুলিয়ে নিলাম। নিজেকে খুব নিরাপদ মনে হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল সত্যিই তো আজ আমার বাসাটা না থাকলে আমি কোথায় যেতাম। কোথায় বশে উপভোগ করতাম বৃষ্টির আনন্দ?

সেই দুটি কাক যেন কিছু না বলেই অনেক কিছু শিখিয়ে দিয়ে গেল। জানালার পাশে বসেই হঠাতৎ ছন্দ মেলাতে শুরু করলাম

আমার বাড়ি 

যেই খানে মোর অস্তিত্ব

 স্মৃতি শত শত

তাইতো আমার নিজের বাড়ি

আবেগ বিস্তৃত।

সুখের সময়, দুখের সময়

আগলে রাখে মায়ায় আমায়

আনন্দ আর উৎসবে

নতুন রুপে রাঙায় আমায়

দিনের বেলা, রাতের বেলা

তার সাথেই নানান খেলা

মনের মাঝে ভাসায় সে-

আনন্দেরই ভেলা।

সুখের খবর, দুখের খবর

আগেই জানে সে

বহুদূর থাকলেও

মন থাকে তারই পাশে।

ছোট বেলা, বড় বেলা

কাটানো সারা বেলা

তার সাথেই চুপি চুপি

মনের কথা বলা।

যেই বাড়ির দেওয়ালে এখনো

মোর হাতের ছোঁয়া

তাইতো আমার নিজের বাড়ি

যেথায় হারিয়ে যাওয়া।

আমার বাসা! হ্যাঁ, আমার একমাত্র আশ্রয়। সেদিন থেকেই আমার ভালোবাসা আর পরিবারের উষ্ণতায় এক টুকরো শান্তির নীড় এই বাসা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com