রচনা লিখে সারাদেশে আমি প্রথম

বলছি অগাস্ট মাসের কথা। অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা শেষে ঈদের ছুটি কাটাচ্ছি।
রচনা লিখে সারাদেশে আমি প্রথম

যেহেতু এবছর মহামারির কারণে জীবনযাত্রায় এক ধরনের শিথিলতা আসে, তাই ঈদে কোথাও বেড়াতে যাইনি। ছুটিটা অন্যভাবে কাটানোর নানারকম উপায় খুঁজছিলাম।

বাবা জানালেন, বঙ্গবন্ধুর লেখা অসমাপ্ত আত্মজীবনীর কথা। ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর জীবনাচরণ সম্পর্কে আমার দুর্বলতা রয়েছে। তাকে জানার স্পৃহা অনেক। পড়া শুরু করলাম বইটি। সারাদিনই বইটা পড়তাম। মাত্র তিন দিনেই শেষ করে ফেললাম।

কিছুদিন পরেই আমাদের কলেজ থেকে এই 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী' গ্রন্থের ওপর আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরের আয়োজনে প্রতিযোগিতার জন্য লেখা আহ্বান করা হয়। যেহেতু আমার বইটি পড়া শেষ, তাই প্রতিযোগিতায় অংশ নিই। লেখার আগে আমাকে সব রকম উপদেশ দিয়ে সহযোগিতা করেন আমার প্রিয় শিক্ষক মো. মুজাহিদ আতীক স্যার। তিনি আমাকে বলেছিলেন, লেখাটি এমনভাবে লিখবে যেন যে বইটি পড়েনি, সে-ও তোমার লেখা থেকে বুঝতে পারে যে বইটিতে কী বিষয় আছে।

এ কথাটি আমার মনে গেঁথে যায়। লেখার সময় স্যারের উপদেশগুলো মেনে চললাম। তিন-চারদিনের মধ্যে লেখাটা শেষ করি। বাবা দেখে বলেন, চমৎকার হয়েছে। তারপর সেটা আমার কলেজে জমা দেই।

কলেজ থেকে এটাসহ আরো অনেক লেখা প্রতিযোগিতার জন্য পাঠানো হয়। সারাদেশ থেকেও আসে লেখা। ৪ নভেম্বর বাবাকে ফোন কল করে জানানো হয়, আমি প্রথম হয়েছি।

বাবা বিশ্বাস করতে পারছিল না। নিশ্চিত হওয়ার জন্য প্রশ্ন করছিল, এটা কি উপজেলা পর্যায়ে না সারা দেশে? তখন বলা হয় সারা দেশে প্রথম।

বাবার কাছে শুনে আমি নিজেও প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। বাবা আর মায়ের উচ্ছ্বাস তখন দেখে কে!খুশির খবরটা জানাই আতীক স্যারকে। তিনি যেন কেঁদেই দিচ্ছিলেন। এই খবর তিনি জানান আয়োজনটির জন্য গঠিত আমাদের স্কুল কমিটির চেয়ারম্যান ড. মো. হায়দার আলী প্রামানিক স্যারকে।

অধ্যক্ষ স্যারও শুনে বেশ খুশি হন। পোস্ট দেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সবার শুভেচ্ছা পেয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে যাচ্ছিলাম।

৯ নভেম্বর বাবা আমার পক্ষে পুরষ্কার গ্রহণ করতে যায় আর্কাইভস ও গ্রন্থাগার অধিদপ্তরে। পুরস্কার যখন হাতে পেলাম, তখন অন্যরকম খুশি লাগল। সত্যি কথা বলতে, আমি যে এই লেখার জন্য পুরস্কার পাব তা আমি কল্পনাও করিনি।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com