আজ প্রায় আট মাস হতে চলল, করোনা সংক্রমণ রোধে যারা নিয়ম মানছি তারা সবাই ঘরেই আছি। সংক্ষিপ্ত পরিসরে অফিস-আদালত খুললেও স্কুল-কলেজ সব বন্ধ।
গত ১৭ই মার্চ থেকে এই ছুটি শুরু হয়েছে, যা কতদিন চলবে কারো জানা নেই। কারণ দফায় দফায় শুধু বাড়ানোই হচ্ছে এই ছুটি। জানি, এটি আমাদের ভালোর জন্যেই কিন্তু মন তো আর মানতে চাইছে না। প্রত্যেকবার নির্দিষ্ট মেয়াদের ছুটি শেষ হবার এক সপ্তাহ আগে থেকে প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা খবর দেখি, আর কিছুক্ষণ পর পর ব্রেকিং নিউজে চোখ তো আছেই। এই বুঝি বলল, দেশের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক, কাল থেকে স্কুল কলেজ সব খোলা। কিন্তু না, আশাব্যঞ্জক কিছুই বলে না। যেমন, এইবার ছুটি বাড়ল ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। এইসব ঘোষণা শুনে খুব খারাপ লাগে, নিজেকে খুব একা মনে হয়, আরো ৩০টা দিন বন্দি থাকতে হবে? বের হতে পারব না? কখনো তো ভাবিনি এতদিন কলেজে যাব না, বন্ধুদের সাথে দেখা হবে না, আড্ডা দেওয়া হবে না। ছুটির প্রথম দিকে খুব খুশি ছিলাম, উৎসাহিত ছিলাম। অনেকদিন বাদে, এরকম একটা বন্ধ পেলাম। কয়েকটা দিন ভালোই কেটেছিল,পড়াশোনাও করেছিলাম ঠিকঠাক মতো। কিন্তু এখন আর কিছুই ভাল লাগছে না। ইট-পাথরের শহরে গৃহবন্দি থাকতে থাকতে হাপিয়ে উঠেছি। কবিতা, গান, গল্প যেসব আগে খুব প্রিয় ছিল আজকাল তাও ভালো লাগে না।
ইদানীং কেমন জানি একটা বিতৃষ্ণা চলে এসেছে সবকিছুর প্রতি। একে তো বন্দি থাকার কষ্ট, তার মধ্যে করোনার অজানা আশঙ্কা, যা সত্যিই খুব ভাবায়। মাঝে মধ্যে মনে শঙ্কা জাগে, আবার যাওয়া হবে তো কলেজের সেই চিরচেনা ক্যাম্পাসে? বন্ধুদের সাথে দেখা হবে তো? নাকি করোনার করাল গ্রাসে সব শেষ হয়ে যাবে?