‘শারিরীক প্রতিবন্ধী কিশোর বলেই কি আমার বন্ধু নেই?’

আমি একজন শারিরীক প্রতিবন্ধী কিশোর। যদিও এই প্রতিবন্ধকতা আমাকে দমাতে পারেনি।
‘শারিরীক প্রতিবন্ধী কিশোর বলেই কি আমার বন্ধু নেই?’

আমি সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের মতোই লেখাপড়া করছি। আমি মানবিক শাখার দশম শ্রেণির একজন ছাত্র।

আমার সমস্যাটা হয় সাত বছর বয়সে। তখন থেকেই আমি সব সময় চার দেওয়ালের মাঝে বন্দি থাকতাম।

আমরা হলাম নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের। মা, বাবা, দুই ভাই, দুই বোন নিয়ে আমাদের সুখের সংসারই ছিল। 

আমি পরিবারের বড় ছেলে। পরিবারের সাধ্যের সবটুকু ব্যয় করলেও আমার যথাযথ চিকিৎসা হয়নি। এর কারণ আর্থিক অসচ্ছলতা। যার ফলে এখন আমি মোটামুটি সুস্থ।

তবে এরপরও আমার জীবন খুব সহজ নয়। নানা কষ্ট নিয়ে আমার পথ চলা শুরু হয়েছে। পরিবেশ, পরিস্থিতি আমাকে উদারভাবে ঘৃণা, উপহাস, তিরস্কার, অবহেলা দিয়েছে উজাড় করে।

আমার জীবনে বন্ধু নামক কোনো শব্দ নেই। আর মাঝে মধ্যে যারা আমার কাছে আসে তারা হলো সুসময়ের মাছি।

আট দশ জন মানুষ যেমন ভাবে বাঁচে আমি ও সেই রকম করেই সবার মাঝে বাঁচতে চেয়েছিলাম। কিন্তু মাঝে মধ্যে কিছু মানুষের অবহেলা, উপহাস আমাকে কষ্ট দেয়।

মাঝে মাঝে হাল ছেড়ে দেই, আবার নিজেই নিজেকে বোঝাই। আমার তো কোনো ভুল নেই, দোষ নেই। আমি কেন নিজেকে কষ্ট দিচ্ছি, আবার উঠে দাঁড়াই।

এখনই আমি নিজের আয়ে চলি। আমার পড়া লেখার যাবতীয় খরচ নিজে টিউশনি করিয়ে জোগাড় করতাম। কখনো অন্যের কাছে হাত পাতিনি। অবশ্য দশম শ্রেণিতে ভর্তির পরপরই আমার পড়ালেখার খরচ বাড়তেই থাকে।

আমি পরিবারের বড়! আমার কত দায়িত্ব, কত স্বপ্ন….  তার কিছুই কি পূরণ হবে না? খুব কান্না আসে এসব ভাবলে।

রাতে আলো নিভে গেলে সবাই ঘুমিয়ে গেলে আমার মনটা আরো খারাপ হয়ে যায়। প্রায় রাতেই কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে যাই।

আমি প্রতিবন্ধী হওয়ার পরও সরকারের কাছ থেকে তেমন কোনো সহযোগিতা পাইনি। আমাদের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী প্রতিবন্ধী ও অসহায়দের পাশে দাঁড়ান। কিন্তু আমি এখনো কেন বঞ্চিত? 

আমাকে নিয়ে কেউ ভাবে না, আমিও যে আট/দশ জনের মতো করে স্বপ্ন দেখি, আমারো যে জীবনের লক্ষ্য আছে এসব কেউ মনেই করে না। সবাই বাঁকা চোখেই দেখে। কিন্তু আমি স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবন যাপন করতে চাই, আমি নিজেকে স্বাভাবিক মানুষ হিসেবেই দেখি। দয়া করে আপনারা আমার চেয়ে আমার শারিরীক প্রতিবন্ধকতাকে বড় করে দেখবেন না।

তুমি কি জান, সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা হ্যালো শুধুই শিশুদের কথা বলে? বয়স যদি ১৮’র কম হয়, তাহলে তুমিও হতে পার শিশু সাংবাদিক! তাহলে আর কী, নিজের তৈরি প্রতিবেদন, ভিডিও প্রতিবেদন, ভ্রমণকাহিনী, জীবনের স্মরণীয় ঘটনা, আঁকা ও তোলা ছবি, বুক বা সিনেমা রিভিউ পাঠাতে পার আমাদের কাছে। লিখতে পার প্রিয় সাহিত্যিক ও ব্যক্তিত্বকে নিয়েও। এমনকি নিজের কথা লিখতেও নেই কোনো মানা।

লেখা ও ভিডিও পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সঙ্গে নিজের নাম, ফোন নম্বর, জেলার নাম ও ছবি দিতে ভুলবে না কিন্তু। তবে তার আগে রেজিস্ট্রেশন করতে ক্লিক করো reg.hello.bdnews24.com

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com