পুঁইশাক, শিম গাছ, করলা গাছ প্রায় সব রকম সবজির গাছই আমাদের বাসায় ছিল। আমাদের একটা বড়ই গাছ ছিল, অনেকের মুখে শুনতাম ভরা দুপুরে কিংবা মাগরিবে সেই গাছের কাছে না যেতে।
আমাদের বাসা অনেক বড় হওয়ায় এই বাসায় মুরগি-হাঁস পালন করত সবাই। আমার চাচা দুই জন অবসর সময়ে এই হাঁস মুরগি দেখাশোনা করতেন, আর আমরা তো ছিলামই। ছোট বেলায় তো আমাদের অবসরের শেষ ছিল না, সারাদিন তাই আমাদের কোনো না কোনো কিছু একটা করতে দেওয়া হতো।
একদিন আমাদের একটি মুরগির ডিম ফুটে অনেকগুলো বাচ্চা হলো, আমরা চাচাতো ভাই বোনেরা সেই সব বাচ্চাগুলো দেখে রাখার দায়িত্ব নিলাম, তবে শর্ত ছিল যে যে বাচ্চা দেখাশোনা করবে বড় হলে সেই মুরগির বাচ্চাটা তার হবে। আমার ভাগ্যেও একটা বাচ্চা ছিল। লাল- কালো মুরগির ছোট্ট একটা বাচ্চা।
বিকেলবেলা, আশেপাশের অনেক বাড়ির ছোট ছোট ছেলেমেয়ে আমাদের এই বাসায় আসত খেলতে। তখনো আমাদের জায়গাটা জেলখানা হয়ে যায়নি, বাড়ি বড় হওয়ায় আমাদের কারোই রাস্তার দিকে যাওয়ায় ১৪৪ ধারা জারি ছিল। একেবারে কারফিউ। যদি কোনদিন কেউ রাস্তায় যায় সেদিন সে রিমান্ডে যেত।
ঘুড়ি উড়ানো, ফড়িং ধরা, লাটিম খেলা, লাল মাটি দিয়ে এন্টেনাওয়ালা মোবাইল বানানো আরও অনেক খেলা ছিল যেগুলো তে আমরা ডুবে থাকতাম। সকালের নাস্তা করার পর আমাদের খেলা শুরু হতো, আর মাঝে খাবারের বিরতি। কিন্ত এরপর আবার আমাদের একটা নিষেধাজ্ঞা ছিল। আসরের আজানের আগে বাইরে যাওয়া যেত না। দুপুর বেলাতে আমাদের ঘরে থাকতেই হতো, সেটা ইচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে।
সন্ধ্যার পর আবার পড়তে বসার একটা রীতি ছিল। শুধু বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার অপেক্ষা আর চিন্তায় অর্ধেক সময় চলে যেত, যদি একবার বিদ্যুৎ চলে যেত, তাইলে আর পায় কে আমাদের। সেই আঁধার সময়টাই সবচেয়ে রঙিন ছিল।
তখন রাত জাগার স্বভাব ছিল না। কোনমতে ভাতটা খেয়েই ঘুমের রাজ্যে হারিয়ে যেতাম। আজকাল ওইসব স্মৃতি মনে করেই আবার কল্পনার রাজ্যে নিজেকে ছেড়ে দেই। জীবনের এই ব্যস্ত সময়ে, ব্যস্ত শহরে সেই অখণ্ড অবসরটাই আমাদের শান্তির ছিল। পালাবদলে হয়ত আবার অবসর সময়ে যাব, তবে সেটা হবে স্মৃতির দুনিয়ায় থাকার জন্য, যখন বয়সের ভারে হাত কাঁপবে, সামনের দাঁত থাকবে না, চলতে পারব না।
তুমি কি জান, সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা হ্যালো শুধুই শিশুদের কথা বলে? বয়স যদি ১৮’র কম হয়, তাহলে তুমিও হতে পার শিশু সাংবাদিক! তাহলে আর কী, নিজের তৈরি প্রতিবেদন, ভিডিও প্রতিবেদন, ভ্রমণকাহিনী, জীবনের স্মরণীয় ঘটনা, আঁকা ও তোলা ছবি, বুক বা সিনেমা রিভিউ পাঠাতে পার আমাদের কাছে। লিখতে পার প্রিয় সাহিত্যিক ও ব্যক্তিত্বকে নিয়েও। এমনকি নিজের কথা লিখতেও নেই কোনো মানা। লেখা ও ভিডিও পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সঙ্গে নিজের নাম, ফোন নম্বর, জেলার নাম ও ছবি দিতে ভুলবে না কিন্তু। তবে তার আগে রেজিস্ট্রেশন করতে ক্লিক করো reg.hello.bdnews24.com |