এসএসসি পরীক্ষা শেষে বাবা আমার পছন্দ অনুযায়ী বেশ কিছু বই কিনে দেন। এরমধ্যে আমার পড়া প্রথম বইটি হল কালজয়ী কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দোপাধ্যায়ের ইছামতি উপন্যাসটি। এটি বিভূতিভূষণের শেষ প্রকাশিত উপন্যাস। ইছামতির জন্য তিনি মৃত্যুর পর মরনোত্তর রবীন্দ্র পুরস্কার পান।
উপন্যাসটি ইছামতি নদীকে কেন্দ্র করে রচিত হয়।এই উপন্যাসে বিভূতিভূষণের জন্মস্থান বারাকপুর তথা নিশ্চিন্দিপুরের মোল্লাহাটি নীলকুঠিরে উনিশ শতকের নীলবিদ্রোহে মানুষের বিভিন্ন মর্মান্তিক ইতিহাসের কথা উল্লেখ আছে।
কয়েকটি চরিত্র বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। যার মধ্যে প্রধান হলো ভবানী বাড়য্যে। উপন্যাসের শুরুতেই ইছামতী নদীর সৌন্দর্যকে অপরূপ উপমায় ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। নদীটির বিস্তৃতি ছোট কিন্তু এর রূপ মুগ্ধকর।
বিভিন্ন ঋতুতে এই নদীর বিভিন্ন রূপ প্রকাশ পায় – লেখক তা বর্ণনা করেছেন। উপন্যাসে শিপটন সাহেবের নীলকুঠির দেওয়ান রাজারাম রায়ের তিন বোন তিলু, বিলু, নিলুর সাথে প্রাচীন প্রথা অনুযায়ী বিয়ে হয় ভবানীর।
এভাবেই শুরু হয় উপন্যাসের কাহিনী। এরপর নীলচাষীদের উত্থান পতনের মর্মান্তিক কাহিনী ফুটে উঠে ইছামতী উপন্যাসে। দরিদ্র নীল চাষীদের দূরূশা ও পরিণতি পরিলক্ষিত হয়। ইছামতি উপন্যাসটি বিভূতিভূষণের খুব বৈচিত্রময় একটি উপন্যাস।
এর মাধ্যমেই তিনি সাহিত্যিক জীবনের সমাপ্তি টানেন। তাই এই বইটি বাংলা সাহিত্যের এক অমূল্য সম্পদ হিসেবে রইবে চিরকাল।