প্রতিবছর নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, নাটোর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া প্রভৃতি জেলা থেকে অসংখ্য শিক্ষার্থী রাজশাহীতে আসেন। রাজশাহীতে এসে প্রথমেই তারা আবাসন ও খাদ্য সমস্যার মধ্যে পড়ে।
এখানে মেসের রুমগুলো অত্যন্ত ছোট। ছোট্ট একটা রুমে দুইজন, অনেকসময় তিনজনও থাকতে হয়। তাছাড়া অধিকাংশ মেসের খাবারের মান নিয়ে প্রশ্ন আছে।
খারাপ লাগলেও কেউ চাইলেই দুই-একমাস থেকে মেস বদলাতে পারে না। কমপক্ষে ছয়মাস থাকতে হয়। আমার কয়েকজন সহপাঠী তো শারিরীকভাবে নিগৃহীত হয়েছে শুধুমাত্র মেস ছাড়তে চাওয়ার অপরাধে।
একদিকে যেমন আছে আবাসন ঝামেলা অন্যদিকে আছে রমরমা শিক্ষা বাণিজ্য। কোচিং-প্রাইভেট সেন্টারগুলো। শিক্ষার্থীদের লোভনীয় অফার দেখিয়ে কোর্সের টাকা একবারে নিয়ে নিচ্ছে। এক ব্যাচে শতাধিক শিক্ষার্থী থাকায় অনেক দুর্বল শিক্ষার্থীদের কাছে এসব প্রাইভেট-কোচিং সেন্টারগুলো আদৌ কোনো উপকারে আসছে না।
সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিবর্ণ চেহারার শিক্ষার্থীদের ছুটোছুটি দেখে মনে হয় আহা! কোন দৌড়ে নেমেছি আমরা?
এছাড়া অসুস্থ প্রতিযোগিতায় আরো একধাপ এগিয়েছে আমাদের মা-বাবারা। পড়াশোনা হয় না বলে অভিভাবকরা শিশু-কিশোরদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠান না। কিন্তু এক বিষয়ে একাধিক প্রাইভেট টিউটর ও কোচিং সেন্টারে পাঠান।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে না পাঠানোর ফলে শিশু-কিশোরেরা একদিকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা পাচ্ছে না, অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিশু-কিশোরদের যে সামাজিকীকরণ লক্ষ্য করা যায় তা কার্যত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
একাধিক প্রাইভেটে যাওয়ার ফলে শিশু-কিশোরেরা নিজেদের পর্যাপ্ত সময় দিতে পারছে না। এতে করে সৃজনশীল বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আবার অনেকে খেলাধুলার সুযোগও পাচ্ছে না।