আমি একজন কিশোরী। আর তাই আরেকটা কিশোরের জায়গা থেকে বলতে চাই, এই দায় আপনাদের, বড়দের, আপনারা যারা আমাদের অভিভাবক তাদের।
কিশোররা অপরাধে জড়ানোর পেছনে একক কোনো কারণ নেই। এর পেছনে খারাপ সঙ্গ, পরিবারের অসচেতনতা, সঠিক পরিচর্যার অভাব, নৈতিক শিক্ষার ঘাটতি, মৌলিক চাহিদা পূরণ না হওয়া অন্যতম।
অনেক অভিভাবক আছেন যারা সন্তান কী করছে, কার সঙ্গে মিশছে, ইন্টারনেটের সঠিক ব্যবহার করছে কিনা তার খোঁজ করার সময় পান না। ফলে সন্তান বিপথগামী হয়ে যায়। অথচ সময় করে সন্তানের সঙ্গে বসে গল্প করলে, আড্ডা দিলেই কিন্তু অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
‘কিশোর অপরাধ এখন আর ঘর ছেড়ে পালানো কিংবা চুরির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। পারিবারিক মূল্যবোধের অভাব ও সামাজিক অবক্ষয়ের কারণে হত্যা, পাশবিক নির্যাতন, মাদকসহ বড় অপরাধে জড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে।
নিম্ন আয়ের পরিবারের কিশোরেরা দারিদ্রের কারণে, মফস্বল থেকে বড় শহড়ে আসা কিশোরেরা সমাজে টিকে থাকার জন্য এবং উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে অপরাধে জড়াচ্ছে।
শিশু কিশোরদের নিয়ে কেউ ভাবে না। তাদের অভিযোগ বাবা, মারা তাদের সময় দেয় না। তারা কোথায় যাবে? নিরুত্তাপ, হতাশার আবর্তে মনে হয় ঘুরপাক খায় তারা।
যখন একটি শিশু কিশোর বয়সেই জেনে যায় চাকরি পেতে হলে তাকে ঘুষ দিতে হবে তার হতাশ হতে আর কি কিছু বাকি থাকে? পড়াশোনা, লাইব্রেরিতে বসা, সমাজ, মনবতা নিয়ে ভাবা তারা ভুলে যায়।
সমাজপতিদের যার যার অবস্থান থেকে শিশু কিশোরদের প্রতি সুদৃষ্টি দিতে হবে। কিশোর বয়সী সন্তানটি কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে কে মিশছে তা লক্ষ্য করতে হবে। শিশু কিশোররা বাবা মার কাছে যা চাইবে, তাই দিতে হবে এমন কোনো কথা নাই। সেটা নেওয়ার মতো বয়স তার হয়েছে কিনা আগে দেখতে হবে।
এই বয়সী কেউ মোটরসাইকেল কিনে চাইলেই বা একটা দামি ফোন কিনে চাইলেই দিতে হবে এমন কোনো কথা নেই। শিশু কিশোরকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হলে সচেতন হতে হবে সবাইকেই, বুঝতে হবে, বোঝাতে হবে।