গ্রামের বাড়ি রংপুরে হলেও পরিবারের সঙ্গে শেরপুরে থাকি। অনেকে দূরে বাস করলেও ঈদে ঠিকই তার গ্রামের বাড়ি গিয়ে স্বজনদের সাথে আনন্দ উপভোগ করে। আমার পক্ষেও দূরত্বটুকু অতিক্রম করে যাওয়া অসম্ভব কিছু না। তবে সমস্যা হচ্ছে- গ্রামের বাড়ি তো একদম ফাঁকা।সেখানে গিয়ে কার সাথে আমি ঈদ কাটাব?
প্রতিবারের মতো এবারও আমি আর আমার ভাই পরিকল্পনা করেছিলাম, গ্রামে ঈদ করব। কিন্তু দেখা গেল পরিবারের সবাই ব্যস্ত।
আচ্ছা, ঈদের মানে কোন আনন্দ? নিজের জীবনের ব্যস্ততাকে মানিয়ে নিয়ে একান্তভাবে উদযাপন করার আনন্দ? নাকি সেই ব্যস্ততাকে পাশ কাটিয়ে কিছু সময়ের জন্য স্বপরিবারে একসঙ্গে সুখ-দুঃখ ভাগাভাগি করে নেওয়ার আনন্দ?
আমি এখনও ভাবি, সবাই একসাথে না থেকে ঈদ উদযাপন করলে ঈদের আসল অর্থটা কি দাঁড়ায়? এই জন্যই হয়ত যখন স্কুলে ঈদের ছুটির সময় ঘনিয়ে আসে, অন্যদের মতো আমি উল্লাস করি না। কারণ অন্যদের চোখে-মুখে গ্রামের বাড়িতে গিয়ে ভাই-বোনদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দেওয়ার আনন্দ আমার মাঝে ভেসে ওঠে না।
প্রায়ই বাসায় আম্মুর সাথে মন খারাপ করে আমি বলি ‘এই ঈদ চাই না।’ সবার উপর খুব অভিমান হয় আমার। কেন আমি একটা ঈদ পরিপূর্ণভাবে কাটাতে পারি না! নিজেকে এই বলে সান্ত্বনা দিই- আমার মতো হতভাগা আরও অনেকেই আছে, যারা হয়ত ঈদের আসল অর্থই এখন অবধি উপলব্ধি করতে পারেনি। তারাও হয়ত তাদের গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাওয়া বন্ধুদের ‘ঈদ মোবারক’ বার্তার মাঝে আনন্দ খুঁজে নেয়। বাসায় বসে টিভির চ্যানেলগুলোয় ঈদ স্পেশাল আয়োজনগুলোর মাঝেই আনন্দ খুঁজে নেয়।