যন্ত্রে যান্ত্রিক শৈশব
কিন্তু এই সময়ে ইট পাথরের শহরে সেই শৈশব বলে কী কিছু আছে? থাকলেও হয়তো দুরন্ত, আনন্দের অভাবে শৈশবে থাকে না কোনো প্রাণের পরশ।
এই সমাজে প্রতিযোগিতাই শুরুই হয় শিশুর শৈশব থেকে। শৈশব এখন রুপ নিচ্ছে যান্ত্রিকতায়, কেড়ে নিচ্ছে সামাজিকতা, মানবিকতা, আন্তরিকতা।
সবুজহীন শহরের শিশুদের শৈশব কাটছে বিভিন্ন প্রকারের চাপে। পড়াশোনা আর বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ডিভাইসের সাথে জীবন হয়ে উঠেছে প্রাণহীন।
মাটি তথা শিকড় থেকে বিচ্ছিন্ন হয় এখান থেকে। আনন্দে আনন্দে পড়ার বদলে বহুমুখী চাপে পড়াশোনা করা, মাঠে খেলাধুলার বদলে কম্পিউটারে গেমস্ খেলা শিশুদের জীবনকে বিষিয়ে তুলছে।
"পাড়ার সকল ছেলে মোরা ভাই ভাই, এক সাথে খেলি আর পাঠশালায় যাই," পঙক্তিটি এখন নিছক কবিতার একটি লাইন, বাস্তবে শহুরে পরিবেশে তা সম্পূর্ণই ভিন্ন।
খেলাধুলার অভাবটা এখানে একটি বেশ উল্লেযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ কারণ। ঢাকায় রয়েছে খেলার মাঠের অভাব, কোনো এলাকায় কিছু থাকলেও তা চাহিদার চেয়ে অতি নগণ্য। কিছু কিছু থাকলেও তা শিশুদের দখলে না থেকে একটি মহলের দখলে থাকে। তাই শিশুরা ঠিকমতো খেলতেও পারছে না। অন্যদিকে তাদের বেশিরভাগ স্কুলেই নেই মাঠ বা খেলার যায়গা। এরকম যদি হতে থাকে তাহলে আজকের শিশু ভবিষ্যতের কর্ণধাররা পড়বে হুমকির মধ্যে।
তাই এখনি দরকার কার্যকর পদক্ষেপ। সবুজ শিশুদের জন্য দরকার প্রাকৃতিক আবহে ঘেরা সবুজ মাঠ, প্রত্যেকটি এলাকায় পর্যাপ্ত মাঠ বা পার্কের ব্যবস্থা করা এবং দখলদার থেকে মুক্ত রাখা, স্কুলেও খেলাচ্ছলে আনন্দেরচ্ছলে পড়াশোনার পরিবেশ তৈরি করা।
সৃন্দর একটি পরিবেশে একটি শিশু সকল সামাজিক গুণাবলি, মূল্যবোধ, নৈতিকতা অর্জন করে পূর্ণ মানুষ হতে পারে। সরকারসহ সমাজের সকল স্তরের মানুষের সহায়তায় শিশুর জন্য একটা নিরাপদ সমাজ গড়তে হবে। সবাইকে একই মন্ত্রে উজ্জিবিত হয়ে বলতে হবে, "শিশুদের শৈশব রক্ষা করি, নির্মল-সুন্দর আগামী গড়ি।“