বাবা, মাই ক্যাপ্টেন!

আমার পরিবারে মা-বাবার আদর, ভালবাসা সবচেয়ে বেশি আমি পেয়েছি। বিশেষ করে বাবা আমাকে অনেক বেশিই ভালবাসেন।
বাবা, মাই ক্যাপ্টেন!

মা মাঝেই মাঝেই বলেন, "তুই জন্ম না নিলে আমার হয়তো সংসারই করা হতো না।" কী বুঝে বলেন জানি না।

আমার বাবা লেখাপড়া না জানা সহজ সরল একটি মানুষ। তার সরলতায় মুগ্ধ হয়নি এমন মানুষ খুব কম আছে। আবার বাবার সরলতার সুযোগে ক্ষতি করতেও ছাড়েনি এমন মানুষও অনেক পাওয়া যাবে। তবু আমাদের জীবনের যুদ্ধে হার না মানা এক অধিনায়ক আমার বাবা।

ছোটবেলা থেকেই যখন যেটা চেয়েছি সাধ্যমত চেষ্টা করেছেন দিতে। আবার অনেক কিছু দিতে না পেরে কান্নাও করেছেন। অনেক কাজে মা বাঁধা দিলেও বাবা ছেড়ে দিয়েছেন। আমার অসুখ বিসুখে তার কপালের ভাঁজ দেখি সবার আগে।

মনে পড়ে যখন আমি খুব ছোট বেশি হাঁটলেই পা ব্যথা হয়। তখন বাবা আমাকে তার কাঁধে তুলে হাঁটতেন।

হাটে যাবার বায়না ধরলে মাকে বলতেন, "এখন ছোট বলেই যেতে চায়। বড় হলে তো আর যাবে না।"

সেইসব স্মৃতি আজও আমার চোখে ভাসে। এতটুকু জীবনে একবার পিটুনি দিয়েছেন বাবা। বেশিরভাগ দিন তিনি মায়ের পিটুনি থেকে রক্ষা করেছেন আমাকে।

আমার বাবা হয়তো জানেনও না সব বাবাদের জন্য একটা দিবস আছে। বুঝালেও বলবে এতকিছু আমি বুঝি না বাপ। তবু বলি অনেক ভালবাসি তোমাকে বাবা।

ইতিহাস বলছে, আমেরিকার গ্রেস গোল্ডেন ক্লেটন নামের এক নারী প্রথমে বাবা দিবস চালু করেন। ১৯০৭ সালের ডিসেম্বরে আমেরিকার পশ্চিমে ভার্জেনিয়ার ভয়াবহ খনি বিস্ফোরণে প্রায় এক হাজার শিশুর বাবার প্রাণ হারানোকে কেন্দ্র করে তিনি দিবসটি পালনের সিদ্ধান্ত নেন। এরই হাত ধরে ১৯০৮ সালের ৫ জুলাই ভার্জেনিয়ার ফেয়ারমেন্টে এক স্থানীয় গির্জায় দিবসটি প্রথম বারের মতো পালিত হয়।

৫ জুলাই ছিল গ্রেস গোল্ডেন ক্লেটনের বাবার জন্মদিন। তবে ওয়াশিংটনের সনেরা স্মার্ট উড নামের এক ভদ্রমহিলা ১৯০৯ সালে দাবি করেন তিনি নাকি ভার্জেনিয়ার ঐ বাবা দিবসের ব্যাপারে না জেনেই তিনি বাবা দিবসের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন।

যদিও তার ভিন্ন বাখ্যা দিয়েছেন স্মার্ট উড।

তিনি বলেছেন, গির্জার পুরোহিতরা নাকি শুধু মাকে নিয়েই ইতিবাচক কথা বলতেন। বাবাদের বিষয়ে তেমন কিছুই বলতেন না। বিষয়টি ভাবিয়েছে স্মার্ট উডকে। তাই

বাবার প্রতি ভালোবাসা থেকেই নিজের উদ্যোগে ১৯১০ সালের ১৯ জুন দিনে তিনি বাবা দিবস পালন করেন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন দিনে দিবসটি পালন করা হলেও বাংলাদেশে জুনের তৃতীয় রোববার 'বাবা দিবস' পালিত হয়।

শুধু বাংলাদেশে নয় যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জাপান, চীনসহ বিশ্বের ৫২টি দেশে বাবা দিবস পালন করা হয়।

হ্যালোর পক্ষ থেকে বিশ্বের সকল বাবাকে জানাই অনেক ভালোবাসা ও শুভেচ্ছা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com