এসএসসি পরবর্তী দিনলিপি

পাবলিক পরীক্ষা হোক কিংবা স্কুল পরীক্ষা, পরীক্ষার সময়টা হচ্ছে আমাদের সবার কাছে একটা যুদ্ধের মতো।
এসএসসি পরবর্তী দিনলিপি

ফেব্রুয়ারির ২ তারিখে শুরু হয়ে যে যুদ্ধের পর্ব শেষ হওয়ার কথা ছিল ২৩ ফেব্রুয়ারি, সেটা পিছিয়ে হয়েছিল ২ মার্চ।

তাছাড়া ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ হতে হতে আরও সাত দিন। ব্যবহারিক পরীক্ষার সময়টা আমার মতে শান্তিপূর্ণ একটা পর্ব। এই পর্বে সাধারণত আমাদের আর আমাদের বাবা-মার মধ্যে না না চুক্তি নিয়ে আলোচনা হয়। কী পাব, কোথায় যাব, কী কী করব এসব আরকি।

ব্যবহারিক পরীক্ষা শেষ হতে না হতেই চুক্তিটা স্বাক্ষরিত হয়ে যায়। আমরা হয়ে যাই মুক্ত স্বাধীন।  সিলেবাসভিত্তিক পড়ালেখা শিকেয় তোলে ভোঁ দৌড়।

এসএসসি পরীক্ষার মধ্যে বিরক্তিকর দিনগুলোতে ভেবেছিলাম, এটা করব, সেটা করব।  নানা ধরনের পরিকল্পনা করলেও বাস্তবে অনেক কিছুই আসলে করা হচ্ছে না।

তবে প্রচুর ঘুরে বেড়িয়েছি প্রাণের শহর রাজশাহীতে। পাঁচ বছর ধরে রাজশাহী শহরে থাকলেও অনেক কিছুই ছিল অচেনা।

গল্প, কবিতা কিংবা কোনো সংবাদ প্রতিবেদন আকারে গুছিয়ে লেখার অভ্যাস সেই ছোটোবেলা থেকে। গত বছরে যখন আমার লিখিত একটি রম্য গল্প প্রথম সারির এক মুদ্রিত দৈনিক পত্রিকা ছাপল, তখন লেখালেখির প্রতি আমার নেশা তীব্র হয়ে গেল। এসএসসি পরীক্ষার সময় ছুটির দিনগুলোতেও আমি গল্প ও কবিতা লিখেছি। যদিও পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিষয় নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার সময় আমার হাতে একেবারেই ছিল না। যেহেতু কোনো ঝুট-ঝামেলা আপাতত নেই, তাই এখন অনেক বেশি সময় আমি সাহিত্য সৃষ্টির পেছনে ব্যয় করছি।

আমার বাবা একজন কৃষক। কঠোর পরিশ্রম করে জমিতে ফসল ফলান তিনি। কয়েক বিঘা নিজের এবং কয়েক বিঘা অপরের জমি বর্গা নিয়ে আমরা এবার আলু লাগিয়েছি। বাংলাদেশের জনগণের কাছে অন্যতম এক প্রিয় খাদ্য হচ্ছে আলু। আলু চাষে বেশ যত্ন নিতে হয়। অতিরিক্ত পানিতে আলু নষ্ট হয়ে যায়, তাই এ চাষে প্রকৃতির ওপর অনেক বেশি নির্ভর করতে হয়। সকালে ও বিকেলে আলু ক্ষেতে গিয়ে কাজ করি। আব্বুকে সাহায্য করতে পারলে বেশ ভালো লাগে আমার।

এখন বই পড়া হচ্ছে নিয়মিত। বই আমার খুব প্রিয়। এক-দুই পাতার ছোটগল্প পড়ে আমি বেশ মজা পাই। যে লেখাগুলোতে রস আছে, সেগুলো পড়তে আমি বেশ পছন্দ করি। আমার প্রিয় সুকুমার রায়ের লেখা।

মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বই পড়ার প্রতি আমার বেশ আগ্রহ। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে খুব একটা বেশি বই পড়িনি, তবে এখন পড়ছি প্রতিনিয়ত।

অবসরে গান শুনি। জেমস, আইয়ুব বাচ্চু আর উদীয়মান তারকা নোবেল আমার প্রিয় কণ্ঠশিল্পী। অনুপম রায় আমার পছন্দের একজন সুরকার। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের লেখা গানগুলো আমার খুব পছন্দের। ইদানীং গল্প আর কবিতা লেখার পাশাপাশি গানও লিখছি। নতুন নতুন সুর যোগ করছি আমার লেখা গানগুলোতে। কিন্তু সেটাতে কণ্ঠ দিতে পারছি না। আসলে আমার কণ্ঠ খুব পচা কীনা।

দিনগুলো কেমন জানি দ্রুতবেগে ছুটছে। যতই দিন যাচ্ছে, ততই মনে শঙ্কা জাগছে, পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে। যদিও আমি উটকো চিন্তা করি না। এরকম শঙ্কা মনের মধ্যে উঁকি দিলে আমি সেটাকে কঠোর হস্তে তাড়িয়ে দেই। ঘুমোতে যাওয়ার আগে ও ঘুম থেকে ওঠার পরে আমি নিজের মন ও মস্তিষ্ককে বলি,

"যা হবে, ভালো হবে,

খারাপ হলে, দেখা যাবে।"

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com