নিরক্ষরতা নামক সামাজিক ব্যধি থেকে দেশকে মুক্ত করতে দেশে সাক্ষরতার আন্দোলন শুরু হয়েছে। সরকার নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। তবে এখনও নিশ্চিত হয়নি সবার প্রাথমিক শিক্ষা।
সেদিন এমনই এক শিশুর সঙ্গে দেখা হলো, যে কখনও বিদ্যালয়ের চৌকাঠ মাড়ায়নি।
ওর নাম ময়নুল ইসলাম। বাড়ি নরসিংদী জেলায় হলেও পরিবারের সঙ্গে সিলেটে থাকে। তার বয়স নয় বছর। ময়নুলের বাবা একজন ফেরিওয়ালা।
দুই ভাই, তিন বোন ও বাবা-মাসহ মোট পরিবারের সদস্য সংখ্যা সাত জন। বাবার একার পক্ষে পুরো পরিবার চালানো অনেক কষ্টের।
তাই পরিবারের ভরণ-পোষনের ব্যয় চালাতে গিয়ে বাবার সঙ্গে রাস্তায় নেমেছে ও।
বাড়ি বাড়ি ঘুরে সে জিনিসপত্র বিক্রি করে। তা দিয়ে পরিবারের কিছু সাহায্য হয়ে যায়।
সে আরও বলে, সংসারের অভাবের কারণে পড়ালেখা শিখতে পারিনি। পেটের দায়ে কাজ করি। লেখাপড়ার ইচ্ছা আছে কিন্ত উপায় নেই। কারণ পেটে ভাত নেই।
যখন একটি শিশুর পড়ালেখা করার সময় তখন সে এসব কাজ করছে।
দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশের মতো আমাদের দেশে ও শিশু শ্রম আছে। যে বয়সে একটি শিশু স্কুলে যাওয়া আসা করবে, সমবয়সীদের সাথে খেলাধুলা করবে ঐ বয়সে পরিবারের দরিদ্রতার কারণে ময়নুলের মতো শিশুদের কাজ করতে হয়।
আমাদের দেশে শিশু শ্রমের প্রথম ও প্রধান কারণ হলো অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা। এই অসচ্ছল পরিবারের পক্ষে ভরণ-পোষণ মিটিয়ে সন্তানের লেখাপড়ার খরচ যোগানো বাবা-মার পক্ষে সম্ভব হয় না। ফলে তাদের স্কুলে পাঠাতে অভিবাকরা উৎসাহ হারিয়ে ফেলেন।
সন্তান কোনো পেশায় নিযোজিত হয়ে আয় রোজগার করলে পরিবারের উপকার হয়। শিশুদের অল্প পারিশ্রমিকে দীর্ঘক্ষণ কাজ করানো যায় বলে নিয়োগ কর্তারাও তাদের কাজে লাগানোর জন্য আগ্রহী হন।
আজকের শিশুরা আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। তাদের হাতেই রয়েছে ভবিষ্যৎ নামের এক মোমবাতি জ্বালানোর দিয়াশলাই। তবে আইনের বাস্তবায়ন ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে এই শিশুদের কেন উদ্ধার করা হয় না?