‘কিন্তু বাঘ না দেখেই ফিরতে হলো’

লেখাপড়ার জন্য গ্রাম থেকে ঢাকায় আসা। এই শহরের পথঘাট এখনও সব অচেনা।
‘কিন্তু বাঘ না দেখেই ফিরতে হলো’

ভর্তির পর পরই ক্লাস শুরু হয়ে গেছে। ভর্তি হয়েছি লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল এন্ড কলেজে। গ্রাম থেকে এসেছি, তেমন মন বসছিল না কোথাও।

এরই মাঝে একদিন ক্লাসে স্যার এসে বললেন, তোমাদের আগামী কয়েকদিনের মধ্যে শিক্ষা সফরে গাজীপুরে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে নিয়ে যাওয়া হবে। শুনেই খুব খুশি লাগল।

বাসায় এসে ভাইয়াকে সব জানালাম। তখন ভাইয়া সব ব্যবস্থা করে দিলেন।

ছোট বেলা থেকে পড়ে এসেছি শিক্ষা সফর শিক্ষারই একটি অংশ। কিন্তু কখনও গ্রামের স্কুল থেকে আমাদের শিক্ষা সফরে না নিয়ে যাওয়ায় আমরা সেই বিষয়টা বুঝে উঠতে পারিনি।

তাই আমার শিক্ষা সফর নিয়ে ছিল বেশ উৎসাহ ও আনন্দ। শুধু দিন গুনছিলাম কবে যাবো, কবে যাবো।

তারপর সেই দিন চলে এলো। ১৩ ফেব্রুয়ারি সকাল সকাল আমরা রওনা করি।

সেদিন সকাল ৫টায় ঘুম থেকে উঠে গোসল করে তৈরি হলাম। সে কী উত্তেজনা আমার!

সবাই সকালের নাস্তা এক সঙ্গে বাসেই করে নিলাম। বাসে সবাই আনন্দ করছিল।

সকাল সাড়ে ১০টায় বাস থামল বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের গেটে। স্যার এসে বললেন, “আমরা চলে এসেছি, সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট হাতে নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করো।”

আমরা স্যারের কথা মতো সবাই একটা সারিতে দাঁড়িয়ে টিকিট নিয়ে ভেতরে ঢুকি। আমার সেদিন সব কিছুই ভালো লাগছিল।

এরপর আমরা বিভিন্ন দলে ভাগ হয়ে যাই। গ্রুপের লিডার স্যাররা আমাদের একে একে বানর, জলহস্তি আর কত প্রাণী দেখলাম।

এরপর আবার ৩০ টাকার টিকিট কাটতে হলো। কেন? ও মা! ময়ূর দেখব না?

এরপর একে একে দেখলাম কুমিরসহ আরও অনেক প্রাণী।

আমরা নিজেরাই কিন্তু রান্না করেছিলাম সেদিন। তারপর খাওয়া দাওয়া করে আবার ঘুরলাম।

কয়েকদিন আগে পত্রিকায় দেখেছিলাম বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে একটি বাঘের সাতটি বাচ্চা হয়েছে। কিন্তু সময় কম থাকায় আমরা সেদিন আর বাঘ দেখতে পারিনি।

সেদিনের সফরটা অনেক আনন্দের ছিল কিন্তু বাঘ না দেখায় মন খারাপ ছিল। তবে আমার জীবনে এটি একটি স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com