রোববারও চোখে পড়ল একটি সড়ক দুর্ঘটনার সংবাদ।
রাজধানীর কুর্মিটোলায় ফ্লাইওভারের গোড়ায় বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন অনেকেই। তার মধ্যে ছিল কলেজ শিক্ষার্থীও। এ সময় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস শিক্ষার্থীদের চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই দুইজনের মৃত্যু হয়। আহত হন ১৪ জন।
খবরটা দেখে স্তব্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়া আর কিছু করার ছিল না। প্রতিনিয়তই ঘটে যাচ্ছে এমন সড়ক দুর্ঘটনা। বিচার চেয়েও যেন লাভ নেই!
একটি সড়ক দুর্ঘটনা একটা পরিবারের জন্য অভিশাপ। যে শিক্ষার্থীরা আজ প্রাণ হারালো, তাদের নিয়ে হয়তো অফুরন্ত স্বপ্ন বুনেছিলেন অভিভাবকেরা। কে জানে তাদের মধ্যে ছিল কত সম্ভাবনা। সব কিছু যেন অঙ্কুরেই নষ্ট হয়ে গেল।
এমন সংবাদ দেখার পর অন্য অভিভাবকরাও মোটেও স্বস্তিতে থাকেন না। সন্তান বাইরে গেলেই সড়ক দুর্ঘটনার আতঙ্ক চেপে ধরে তাদের। যেমনটা চেপে ধরে আমার অভিভাবককেও। কোনো সন্তান এখন বাইরে থাকলে অভিভাবক শঙ্কায় থাকেন, সন্তান সুস্থ দেহ নিয়ে ফিরবে তো?
রাস্তাঘাটে নিয়মিত চলাচলের সুবাদে দেখি চালক আর পথচারীদের উদাসীনতা। ওভারব্রিজ ব্যবহারের সময়েই যেন সব আলসেমি চেপে ধরে পথচারীদের। আর চালকদের কাছে মানুষের জীবন যেন মূল্যহীন। প্রায়ই দেখা যায় দুইটি বাস পাল্লা দিয়ে চলে কে কার আগে যাবে। বাজিতে জেতার জন্য শুরু হয় বেপরোয়া ড্রাইভিং। যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নাই তাদের। এছাড়া একটু আগে যাওয়ার জন্য কত গাড়িকে ঝুঁকিপূর্ণভাবে ওভারটেক করে। আমি নিজে দুইটি দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী।
এছাড়া গুলিস্থান থেকে খিলগাঁওয়ের লেগুনাতে প্রায়ই দেখি চালকের বয়স একদমই কম। এই বয়সে তো তাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার কথা না। লাইসেন্সকে পাত্তা না দিয়েই চলছে ড্রাইভিং। নিজের জীবন তো বটেই, আরো অনেকের জীবন হাতে নিয়ে গাড়ি চালিয়ে যায় ওরা। গাড়ি চালানো নিয়ে নিশ্চয়ই আইন আছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্যি, সেগুলো কাগজে-কলমে বন্দি। আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ করছেটা কি সেটাও ভাবি। অসতর্কতা আর বেপরোয়া ড্রাইভিংয়ের কারণে হওয়া একটা সড়ক দুর্ঘটনার কারণে বহু মা হারাচ্ছেন তাদের সন্তানকে। অপমৃত্যু ঘটছে বহু সম্ভাবনার। নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা এখন দেশবাসীর কাছে পরম আকাঙ্ক্ষিত।