সবাই চান তাদের সন্তান ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার অথবা অন্য বড় কোনো চাকুরে হোক। টাকা-গাড়ি-বাড়ি হোক।
তাই দেশের কিন্ডারগার্টেনগুলিতে সন্তানদের পড়ানোর জন্য অভিভাবকরা ব্যস্ত হয়ে পড়েন। তাদের ধারণা এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখার মান ভালো। এসব প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করলে তাদের সন্তানরা বেশি জানবে, শিখবে।
সিলেটের এক অভিভাবকের মতে, প্রাইভেট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি বই পড়ানো হয়। ফলে শিশুরা বয়সের তুলনায় অনেক বেশি শিখতে পারে।
এ বিষয়ে অনেক অভিভাবকের একটুও খেয়াল থাকে না যে, শিশুরা বয়সের তুলনায় বেশি বই টানতে গিয়ে শারীরিক-মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, ক্লান্তি বোধ করে এবং একসময় অবসাদগ্রস্থও হয়। আর মানসিক অবসাদের কারণে কোমলমতি ও খেলাধুলা প্রিয় শিশুরা শারিরীকভাবেও ভেঙে পড়ে। কেননা শরীর ও মন একে অপরের পরিপূরক।
যে বয়সে শিদের মাত্র তিনটি বই নিয়ে নাচতে নাচতে স্কুলে যাবার কথা, সে বয়সে তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে অতিরিক্ত বইয়ের বোঝা। এ বোঝা বহন করতে গিয়ে শিশুরা নুইয়ে পড়ছে, আনন্দ মিশে যাচ্ছে মাটির সাথে। তবুও বাধ্য হয়ে বহন করতে হয়, গলধঃকরণ করতে হয়। আসলে অতিরিক্ত কিছুই ভালো নয়। তাই শিশুরা স্বাধীনভাবে পড়ালেখার সুযোগ পাচ্ছে না, খেলতে পারছে না, ঘুমাতে পারছে না। আর এসব কিছু মন্দ প্রভাব ফেলছে শিশুদের জীবনে।
শিক্ষকের মতে, বয়সের তুলনায় শিশুদের উপর অতিরিক্ত বই চাপিয়ে দিলে এবং অতিরিক্ত শেখাতে গেলে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারই কথা। বর্তমান জ্ঞান-বিজ্ঞানের যুগে শিশুদের বেশি শেখাতে হবে ঠিক, কিন্তু তা অবশ্যই বয়সের সাথে সামঞ্জস্য রেখে হতে হবে।
আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যত। সুতরাং ভবিষ্যতের জন্য সুন্দর ও সুস্থ একটি প্রজন্ম রেখে যেতে হলে শিশুদের প্রতি যত্নবান হতে হবে। তাদের খুশি রাখতে হবে।পড়াতে ও শেখাতে হবে বয়সের সাথে সামঞ্জস্য রেখে, যাতে মানসিকভাবে একটুও চাপের মোকাবেলা করতে না হয়। তাদেরকে স্বাধীনভাবে বাঁচার অধিকার দিতে হবে।