আমাদের ক্লাব ‘প্রত্যয়’

আমাদের একটা বিতর্ক ক্লাব আছে, নাম প্রত্যয়। এই ক্লাব থেকে আমরা নানা জায়গায় গিয়ে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করি।
আমাদের ক্লাব ‘প্রত্যয়’

২৩ এপ্রিল এমন এক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই। পল্লীকবি জসীমউদ্দিন হলে প্রতিযোগিতা হয়।

অনুষ্ঠান শেষে সন্ধ্যায় বৃষ্টিতে ভিজে ক্লান্ত শরীর নিয়ে সবাই বাসে উঠলাম। তখনই ক্লাবের এক বড় ভাই খবর দিলেন সামনেই বিডিএফ মানে বাংলাদেশ ডিবেট ফেডারেশন এর প্রোগ্রাম আছে। তার মুখেই শুনলাম ‘সাউথ এশিয়ান পার্লামেন্টারি ফর চিল্ড্রেন্স’ অনুষ্ঠানে যাওয়ার কথা। সেই অনুষ্ঠানে তিনশ শিশু শিশু বাজেট নিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার মেম্বার অফ পার্লামেন্টদের প্রশ্ন করবে বলে জানান তিনি।

আমার খুশি আর কে দেখে? ওইদিন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু।

একে একে সবাইকে ফোন করা, তারপর সবাইকে নিয়ে হোটেল সোনারগাঁয়ে অনুষ্ঠিত প্রোগ্রামে অংশ নেওয়া।

খুব অবাক হয়েছি যখন দেখেছি খুলনা, রংপুর এমনকি রাজশাহী থেকেও আমার মতু শিশুরা এসেছে।

তবে তার চেয়েও বেশি অবাক হয়েছি আটটি দেশের প্রায় ৩০ জন মেম্বার অফ পার্লামেন্টদের দেখে।

দিনটি ছিল বর্ণিল। সেখানে অনেক কিছুই শিখলাম। প্রথমত দায়িত্ববোধ, তারপর ক্লান্তি, বসে বসে দীর্ঘ আলোচনা শোনা, তারপর বিশেষ কিছু মানুষের সাথে দেখা করা।

বক্তৃতায় কেউ একজন বলেছিলেন, "you are the future leader of the country." তখন মনে হচ্ছিল কেউ যেন আমাকে যুদ্ধে নামিয়ে দিয়েছে। এখন দেশকে বাঁচাতে হবে। সেদিন দেশের প্রতি নাড়ীর টানটা অনুভব করেছি।

দিনশেষে এই অর্জনের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাতে হয় প্রত্যয়ের কাছেই। আমাদের ক্লাবটা হয়ত অনেক ছোট, আমাদের হয়ত কোনো নির্ধারিত অফিস নেই, আমরা নিয়মিত ক্লাবেও যাই না, আমাদের কোনো নির্ধারিত ফান্ড নেই, আমরা কোনো ভাড়াটিয়া লেখক দিয়ে ক্লাবের প্রচারণা করি না। সবাই নিজের ইচ্ছায় আসে আবার নিজের ইচ্ছায় চলেও যায়। তবুও ক্লাব থেমে নেই। প্রতি শুক্রবার একজন হলেও ক্লাবে গিয়ে উঁকি মারে।

প্রত্যয় আমাদের যা দিয়েছে তার তুলনায় আমরা কিছুই দিতে পারিনি। শুধু নিয়েই গেছি।

মুস্তাকিম ভাইয়ের ছুটির দিনের ঘুম কেড়ে নিয়েছি, তুহিন ভাইকে ব্যাডমিন্টন খেলা থেকে টেনে নিয়ে এসে ক্লাবে বসিয়েছি, আমার পূর্ববর্তী সদস্যরা রুশো নামের এক ভাইকে টাঙ্গাইল থেকে ডেকে এনেছে জাস্ট এক ঘণ্টার একটা ক্লাসের জন্য।

প্রত্যয় পরিচয় করিয়ে দিয়েছে অসাধারণ কিছু মানুষের সাথে যারা প্রতিনিয়ত সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন আমাদের।

আমরা বড় হচ্ছি, অল্প অল্প করে শেখার চেষ্টা করছি। কয়দিন পর হয়তো কলেজে ভর্তি হয়ে উত্তরার বাইরে চলে যাবো, ক্লাবে নিয়মিত আসতেও পারবো না।

তবে প্রত্যয় তার নিজের আসনটা ধরে রাখবে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.

সর্বাধিক পঠিত

No stories found.
bdnews24
bangla.bdnews24.com